নববর্ষে পালকিতে বর-বধূ
বর্ণিল আয়োজনে রাজশাহীজুড়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ বরণ চলছে। বৈশাখের বর্ণিল সাজে মেতে উঠেছে রাজশাহী। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সকাল থেকে নানা আয়োজনে মেতে উঠেন রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বর্ষবরণের আয়োজনে পালকিতে বাঙালি বর-বধূর দেখা মিলেছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন, রাজশাহী কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় সকালে। বিভিন্ন স্থানে বসেছে নানা ধরনের দেশীয় পণ্যের মেলা।
সকাল থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে র্যালি বের করা হয়। র্যালিগুলো বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়। র্যালিতে বাংলার ঐতিহ্য ফুটে উঠে।
বাংলা নববর্ষ বরণে রাজশাহী নগরীজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। বৈশাখের খরতাপ উপেক্ষা করে বর্ষবরণে মেতে উঠেছেন নগরবাসী। সাদা আর লালে রঙিন হয়ে উঠেছে যান্ত্রিক জীবন। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র আর ভুভুজেলার সুরে মেতেছেন সবাই।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর পদ্মা পাড়ের ঘোষপাড়া বটতলায় শুরু হয় বাংলা বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। রাজশাহী জেলা পরিষদ কার্যালয়েও চলছে উৎসব। নববর্ষ উপলক্ষে রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনারের বাংলোর পেছনের মাঠে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এ প্রাণের উৎসবকে ঘিরে নাটক, কবিতা, নৃত্য, আবৃত্তি ও সংগীতের আয়োজন করা হয়েছে। রাবির সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠন তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে নানা বৈচিত্র্যের সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছে।
রাজশাহীতে পহেলা বৈশাখের মূল আকর্ষণ এখন রাবির চারুকলা বিভাগকে ঘিরে। চারুকলা বিভাগকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (রুয়েট) মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে। এছাড়া বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক ও লোকজ সংগীতের অনুষ্ঠান।
রাজশাহী কলেজ থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এদিন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, সব সরকারি হাসপাতাল ও শিশু পরিবার এবং শিশু সদনে উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিশুদের নিয়ে চলছে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
কারাবন্দিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে কারাগারে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ পাঠকদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
রাজশাহী বিভাগীয় গ্রন্থাগারে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল ইনস্টিটিউট তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
নববর্ষ উপলক্ষে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও জিয়া পার্কে অন্যান্য দিনের তুলনায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। এর বাইরের নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। নতুন বছরের প্রথম দিনে সবাই মেতেছেন প্রাণের উৎসবে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম