ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ ভৈরবের ইমরান


প্রকাশিত: ০৭:৫১ এএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ভূমধ্যসাগরে ইউরোপ পাড়ি দেয়া দুটি নৌকা ডুবির ঘটনায় ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামের ইমরান নামের এক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন। অন্যদিকে, ডুবে যাওয়া আরেক নৌকা থেকে বেঁচে গিয়ে অসুস্থ হয়ে ইতালির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন একই গ্রামের জিলানি নামের অন্য এক যুবক।

গত মঙ্গলবার লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির যুয়ারাহ শহর থেকে ইতালি যাওয়ার সময় উপকূলে নৌকার ইঞ্জিন থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে নৌকাতে তালা বদ্ধ থাকা ৫০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়। এর দুই দিন পর বৃহস্পতিবার ৫ শতাধিক অভিবাসী ও শরণার্থী নিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ইতালির উপকূলে ও লিবিয়ার উপকুলে দুটি নৌকা ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৭৮ বাংলাদেশির মধ্যে ৫৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ইতালির উপকূল লামপেদুসা এলাকার কাছাকাছি ডুবে যাওয়া নৌকাতে থাকা ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামেন জিলানিকে যুবককে সাগর থেকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ইতালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া। তবে লিবিয়ার উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে থাকা একই গ্রামের আলকাছ সিকদারের ছেলে ইমরান সিকদারের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে নিখোঁজ হওয়ায় ইমরানের কোনাে সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নৌকাডুবে মৃত্যু হলেও সন্তানের মরদেহ দেখতে চান মা-বাবা। আর যদি মারা না যায় তার সন্ধান চান বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

ইমরানের বাবা মো.আলকাছ সিকদার জাগো নিউজকে বলেন, জমি জমা সব বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম সংসারে সুখ আনার জন্য। কিন্তু সুখের বদলে এখন আমি পাব লাশ। আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের সন্ধান চাই।

নিখোঁজ ইমরানের নানা হাজী দীন ইসলাম সিকদার, ইমরানের বড়মা ও ইমরানের বড় ভাই আবুল বাসার জাগো নিউজকে বলেন, সর্বশেষ কথা বলার সময় ইমরান জানিয়েছিলেন যে এ ট্রলার দিয়ে সে ইতালি উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। প্রথম নৌকাটিতে জিলানী ছিল। ধারণা করা হচ্ছে দ্বিতীয় নৌকাটিতে ইমরান ছিল। গত মঙ্গলবারের পর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না এবং সে ফোনও রিসিভ করছে না। জীবিত বা মৃত যেটাই হোক সন্তানের মুখ দেখতে চান তারা।

ইতালির লামপেদুসার এলাকায় ডুবে যাওয়া ট্রলার থেতে উদ্ধার হওয়া জিলানীর বাবা আব্দুল মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, আমার ছেলেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সে আমাকে ফোনে এ কথা নিশ্চিত করেছে।

আমার যেটুকু জমি ছিল তা বিক্রি করে তাকে পাঠিয়েছিলাম সংসারের অভাব দূর করার জন্য। এখন আমার সন্তান বেঁচে আছে এর থেকে সুখের খবর আর হতে পারে না। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তার বাবা।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এমজেড

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।