পরীক্ষা কেন্দ্রে মাদরাসাছাত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন
ফেনীর সোনাগাজীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগকারী এক মাদরাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সহপাঠীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
দগ্ধ ছাত্রী বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামে। সে আলিম পরীক্ষার্থী।
দগ্ধ ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, সকালে আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে তার বোন সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায়। সেখানে তাকে ফুঁসলিয়ে অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রিত কয়েকজন শিক্ষার্থী মাদরাসার ছাদে নিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠায়।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল আলম জানান, ওই ছাত্রীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের জানান, ছাত্রীর শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এর আগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। অন্যদিকে আরেকটি অংশ তার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
রাশেদুল হাসান/আরএআর/এমএএস/আরআইপি