নৌকা জিতে যাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি লুট
উপজেলা নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় নৌকা মার্কা ভোট দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ও দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমানের ছেলে যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল জাকিরের পেটে ছুরিকাঘাত করেছে তারা। রোববার রাতে উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের বরাব গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হয়ে ওঠেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী। সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির এমপি থাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রভাব বেশি।
রোববার উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিজয় হওয়ায় রাতেই সাদীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাতীয় পার্টির নেতা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পাগলা সিরাজ, মাহমুদ আলী, আব্দুর রব, ওমর আলী, মিলন ও শামীমসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ছেলে যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল জাকিরকে ছুরিকাঘাত করেন তারা।
আহত যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল জাকিরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ আল জাকির সোনাগাঁয়ের সাদীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি।
এদিকে, একইদিন দিন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকের ক্যাম্পে ভাঙচুর চালিয়ে নৌকার সমর্থক আমির হোসেন, ইমরান ও শাহিনসহ ৫-৬ জনকে পিটিয়ে আহত করেন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।
আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান বলেন, আমি ও আমার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সাদীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাতীয় পার্টির নেতা রফিকুল ইসলাম এই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের ঘোড়া প্রতীকে ভোট চান। ঘোড়া মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য আমাদের চাপ প্রয়োগ করেন মেম্বার রফিকুল ইসলাম। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে দলের সঙ্গে বেইমানি না করে নৌকা মার্কায় ভোট দেই।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী জিতে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে জাতীয় পার্টির নেতা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পাগলা সিরাজ, মাহমুদ আলী, আব্দুর রব, ওমর আলী, মিলন ও শামীমসহ অর্ধশতাধিক লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় আমার দোকান ও বাড়ি লুটপাট করে তারা। আমার ছেলে এতে বাধা দিতে চাইলে ছুরিকাঘাত করা হয়। বিষয়টি আমি সোনারগাঁ থানা পুলিশের ওসিকে জানিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই আমি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মো. শাহাদাত হোসেন/এএম/পিআর