ঝিনাইদহের যুবসমাজে পর্নোগ্রাফির আসক্তি বাড়ছে


প্রকাশিত: ০৭:৩৩ এএম, ৩১ আগস্ট ২০১৫
প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহে যুব সমাজের মাঝে বাড়ছে পর্নোগ্রাফি আসক্তি। যে কারণে জেলার ছয় উপজেলায় বেড়েছে ইভটিজিং ও ধর্ষণের মতো ঘটনা। প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে যুবসমাজের মাঝে অবাধে ছড়িয়ে পড়ছে পর্নোগ্রাফি এবং বাড়ছে আসক্তি।
 
ঝিনাইদহ জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকার কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানগুলোতে মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ড লোডের নামে অবাধে চলছে পর্নোগ্রাফি বিপণন ব্যবসা। যার ফলে সহজলভ্য হওয়ায় এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা। ফলসরূপ নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা। এ কারণে তাদের ইভটিজিং ও ধর্ষণের মতো নানা সমাজবিরোধী কাজে বেশি পরিমাণে ধাবিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

অনুসন্ধানে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলাসহ শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, হরিণাকুণ্ডু, মহেশপুর ও কোর্টচাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে মেমোরি কার্ডে পর্নোগ্রাফি আপলোড করা হচ্ছে। এসকল দোকানের সাইনবোর্ডে কম্পিউটার কম্পোজ, মেমোরি কার্ড লোড ও ডিজিটাল ছবি তোলার কথা লেখা থাকলেও এর আড়ালে অবাধে চলছে পর্নো ভিডিও সরবরাহের ব্যবসা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেশি ও বিদেশি পর্নোগ্রাফি লোড করতে মেমোরি কার্ডে প্রতি জিবি ১০ টাকা হারে নেয়া হচ্ছে। এসব অশালীন ভিডিওর পাত্র-পাত্রী হিসেবে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অভিনেতা ও অভিনেত্রী রয়েছেন। আর এ কারণে এসব এগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে।

বর্তমানে তরুণ ও যুবসমাজের একটি বৃহৎ অংশের কাছে মাদকের নেশার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর নেশা হয়ে দেখা দিয়েছে পর্নোগ্রাফি সংরক্ষণ ও দর্শন। আর মাদকের চেয়ে সহজলভ্য হওয়ায় এ নেশায় আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার প্রতি অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। এছাড়া যুবসমাজের দ্রুত চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক ছেলেমেয়েরাও জড়িয়ে পড়ছে নানা অসামাজিক কার্যকলাপে।

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮/৩ ধারা অনুসারে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন এবং এরূপ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

কিন্তু কঠিন আইন থাকা সত্ত্বেও আইন সম্পর্কে জনগণের সচেতনতার অভাব এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ না থাকাতে দিন দিন পর্নোগ্রাফি সরবরাহের অপরাধ বেড়ে চলেছে।

সমাজের সচেতন অভিভাবকরা জানান, এ অবস্থায় পর্নোগ্রাফি আইন সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এবং সে সঙ্গে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানের নামে যে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেমোরি কার্ড পর্নোগ্রাফি লোড দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে সমাজ থেকে  ইভটিজিং ও ধর্ষনের মতো ঘটনা কমানো সম্ভব হবে।

এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।