দিন বদলেছে জেলে পল্লীতে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ২০ মার্চ ২০১৯

উপকূলীয় জেলা বরগুনার বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপজেলা পাথরঘাটা। ঝড় আর জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে লড়াই করা এ এলাকার সিংহভাগ মানুষের প্রধান পেশা মৎস্য শিকার। প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের স্বল্প শিক্ষিত মানুষগুলোর জীবন এক সময় কুসংস্কারের বেড়াজালে জড়ানো ছিল। সেই কুসংস্কার মিটিয়ে সুখি ও সুস্থ দাম্পত্ত জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছর দশেক আগেও জেলে অধ্যুষিত এ এলাকার দম্পতিদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা ছিল নামমাত্র। আবার কুসংস্কার ও লোকলজ্জার কারণে অধিকাংশ দম্পতি গ্রহণ করতো না কোনো ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। এর ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হারও ছিল বেশ।

কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমে এখানকার শতভাগ দম্পতিকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। এতে একদিকে যেমন অধিদফতরের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে, তেমনি সুখি ও সুস্থ জীবন যাপন করছেন এখানকার দারিদ্র্যপীড়িত জেলে পল্লীর দম্পতিরা।

Barguna

পাথরঘাটার জিয়া মাঠ সংলগ্ন জেলেপল্লীর গৃহবধূ রোকসানা (২৬) জাগো নিউজকে বলেন, আমার শ্বশুর-শাশুড়ির সাত সন্তান। আর আমরা ছয় ভাই-বোন। কিন্তু আমার মাত্র দুটি সন্তান।

আর সন্তান নেবেন না জানিয়ে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, আগে যে কুসংস্কার ছিল, এখন তা নেই। জেলে পল্লীগুলোতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীদের নিয়মিত পদচারণায় বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণে লোকলজ্জাও নেই।

রোকসানার শাশুড়ি রেনু বেগম (৫৫) বলেন, আমাদের সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কোনো ধারণাই ছিল না। কোনো পরামর্শদাতাও ছিল না। কুসংস্কার ও অভিজ্ঞতার কারণে পরামর্শের জন্য কোথাও যাওয়ারও সুযোগ ছিল না। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা নেই।

Barguna

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা পারভিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রচারেই প্রসার’ এই উক্তিটি পাথরঘাটার দারিদ্র্যপীড়িত জেলে পল্লীর দম্পতিদের ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত। পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে সরকারে নানামুখী প্রচারের পাশাপাশি পাথরঘাটায় কর্মরত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অক্লান্ত পরিশ্রম আজ এ সাফল্য এনে দিয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (এমসিএইএফপি) ডা. বজিলী বালা মৈত্রি জগো নিউজকে বলেন, কুসংস্কারের বেড়াজাল ডিঙিয়ে মানুষকে আলোর পথ দেখানো কঠিন। কিন্তু আমরা সেটি করতে পেরেছি। এই উপজেলার প্রতিটি দম্পতিকে আমরা পরিবার পরিকল্পনার আওতায় এনে তাদের নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

এ সফলতার কৃতিত্ব তিনি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দিয়ে বলেন, আমাদের এ সফলতা ধরে রাখার জন্য আমরাই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।