ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসার ৯ মাস পর কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গনিগঞ্জ গ্রামে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে পাঁচ সন্তানের জনক। এ ঘটনায় জড়িত আব্দু নূর মিয়াকে (৫৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে উপজেলার গনিগঞ্জ বাজার থেকে আব্দু নূর মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার নূর মিয়া উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গনিগঞ্জ গ্রামের মৃৃত আরব আলীর ছেলে।
পুলিশ ও নির্যাতিত কিশোরীর পরিবার জানায়, ২০১৮ সালের জুন মাসে গনিগঞ্জ গ্রামের পাঁচ সন্তানের জনক আব্দু নূর মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৩ বছরের কিশোরীকে কয়েকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাম্য সালিসে নূর মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে জরিমানার ২০ হাজার টাকা দেয় আব্দু নূর মিয়া।
এ নিয়ে নির্যাতিত কিশোরীর দিনমজুর বাবা-মা দিনের পর দিন গ্রাম্য সালিসদারকে পেছনে ঘুরেও বিচার পাননি। গ্রাম্য মাতব্বরদের ভয়ে বিষয়টি পুলিশকেও জানাতে পারেনি নির্যাতিত কিশোরীর পরিবার।
নির্যাতিত কিশোরীর দিনমজুর বাবা বলেন, গ্রাম্য সালিসে গনিগঞ্জ গ্রামের মাতব্বর আব্দুল মজিদ, আব্দুল আওয়াল, মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, খইছা মিয়া মেম্বার, কাহার মিয়া ও আনজু মিয়াসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সালিসে উপস্থিত থাকা আব্দুল কাইয়ূম বলেন, সেদিন আমাদের কাছে ধর্ষণের বিষয়টি জানায়নি কিশোরীর পরিবার। তারা আমাদের বলেছে আব্দু নূর মিয়া ওই কিশোরীর শরীরের কাপড় ধরে টান দিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ রকমের কাজ না করে তার জন্য নূর মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলাম আমরা।
এরই মধ্যে কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ মার্চ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই কিশোরী নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশকে জানান।
রোববার রাতে কিশোরীর পরিবার ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের কথা বলে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ। সোমবার অভিযান চালিয়ে আব্দু নূর মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিকেলে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি এখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই ঘটনায় জড়িত আব্দু নূর মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিত কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই কিশোরী নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ বিষয়ে আব্দু নূর মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএম/এমএস