বঙ্গোপসাগরে আছে ৪৩০ প্রজাতির মাছ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৩:৫৫ পিএম, ০৭ মার্চ ২০১৯

দেশের সমুদ্রসীমা মূল ভূ-খণ্ডের প্রায় সমান হলেও মাছ উৎপাদনের মাত্র ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ অবদান রয়েছে সামুদ্রিক মাছের। বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি থেকে মাছ উৎপাদন খুবই অপ্রতুল। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও কৌশল জানা না থাকায় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হচ্ছে না বলে মনে করছেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা।

তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও কৌশল রপ্ত করার জন্য গত তিন বছর ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীদের অনুসন্ধানে বঙ্গোপসাগরে ৪৩০ প্রজাতির মাছ শনাক্ত হয়েছে।

এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০ মাছের ক্যাটালগিং করা হয়েছে। বাকি মাছগুলোর ক্যাটালগিংয়ের পাশাপাশি আরও নতুন প্রজাতির মাছের সন্ধানে বঙ্গোপসাগরে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে বিজ্ঞানীদের।

coxbazar-(3)

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) উদ্ভাবিত চারটি মেরি কালচার প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ের বিজ্ঞানীদের কাছে হস্তান্তর কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা।

কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জানানো হয়, আমাদের সমুদ্রের আয়তন ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার হলেও মৎস্য উৎপাদনে সামুদ্রিক মাছের অবদান খুবই অপ্রতুল। এ কারণে বর্তমান সরকার সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে ব্লু-ইকোনমি জোরদারের যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তারই লক্ষ্যে এখন নতুন নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে জোর গবেষণা চলছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের উপকূলীয় ছয় জেলার ৩০ জন মৎস্য কর্মকর্তাকে কক্সবাজারে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র মিলনায়তনে কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক (প্রযুক্তি হস্তান্তর ও মনিটরিং ইউনিট) ড. ফৌজিয়া ইয়াসমিন। কর্মশালায় বিএফআরআই উদ্ভাবিত চারটি মেরি কালচার প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ের বিজ্ঞানীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

কর্মশালায় বিএফআরআই উদ্ভাবিত এসব প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন- বিএফআরআইর কক্সবাজারের উপ-পরিচালক ড. আবদুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. যাকিয়াহ রহমান মনি, কক্সবাজার সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম ও জাকিয়া হাসান প্রমুখ।

coxbazar-(4)

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম বলেন, হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনে আমরা সফল হলেও আমাদের অর্জিত প্রযুক্তি এখনো অনেক দুর্বল। কাঁকড়ার পোনা শতকরা মাত্র এক থেকে দেড় ভাগ বাঁচে। আমাদের লক্ষ্য এ হার শতকরা ১০ ভাগে উন্নীত করা। তবে সি-উইড বা সামুদ্রিক শৈবাল চাষে আমাদেরকে উন্নত বিশ্বের কাতারে উঠতে বেশি দিন সময় লাগবে না।

কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক ড. ফৌজিয়া ইয়াসমিন বলেন, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যমআয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত করার জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জনে ব্লু-ইকোনমি তথা সমুদ্র সম্পদের উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছে। ২০১২ ও ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পর আমাদের সমুদ্র সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বহুমুখী গবেষণা শুরু হয়েছে। উন্নত বিশ্বের কাতারে যেতে হলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

সায়ীদ আলমগীর/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।