বাঁচানো গেল না অগ্নিদগ্ধ সালমাকে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ১০:৪৯ এএম, ০২ মার্চ ২০১৯

বাঁচানো গেল না অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সালমা বেগমকে। টানা ২৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শুক্রবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সালমার স্বামী রুবেল মিয়া স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সালমা বেগম তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার দুই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম গত ৭ ফেব্রুয়ারি মাটির চুলায় রান্না করার সময় অসাবধানতায় তার গায়ে আগুন লেগে যায়। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

তার শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দরিদ্র রুবেল মিয়া ধার দেনা করে মাত্র পাঁচদিন বার্ন ইউনিটে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পেরেছিলেন। এতেই তার খরচ হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে সালমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তিনি।

সালমাকে নিয়ে ‘বিনা চিকিৎসায় মরতে বসেছে অভাগী সালমা’ শিরোনামে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাগো নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অর্থাভাবে চিকিৎসা না হওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়সহ অনেকেই আর্থিক সহযোগিতা করেন। এরপর তাকে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

রুবেল মিয়া জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষত নিয়ে তার স্ত্রী সালমা হাসপাতালের বিছানায় সব সময় ছটফট করেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিতে পারেননি। প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা খরচ করাও তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র কিনতে না পারায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়েছে। গত তিনদিনে তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। পোড়া ক্ষতের যন্ত্রণায় ধীরে ধীরে সালমা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। শনিবার সকালে সালমার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। তাকে বাড়িতেই দাফন করা হবে।

বি.এম খোরশেদ/আরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।