ফাহিমার পা দুটি পচে গেছে, কাটার টাকা নেই
এক মাস আগেও সুস্থ ছিলেন ফাহিমা খাতুন। কিন্তু এরই মধ্যে পাল্টে গেছে তার জীবন চিত্র। যন্ত্রণার শুরুটা ছিল এক পায়ে ব্যথার মাধ্যমে। ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথা না কমে পচন ধরেছে পায়ে। সেই পচা অংশ থেকে এখন খসে পড়ছে মাংস। এখন তার দুটি পা পচে গেছে। সেই পচা অংশ থেকে পোকাও বের হচ্ছে।
স্ত্রী ফাহিমা খাতুনকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের ভ্যানচালক স্বামী ফজিজুল ইসলাম।
ফাহিমা খাতুনের মেয়ে সোনিয়া আক্তার জাগো নিউজকে জানান, বাবার ভ্যান চালানো উপার্জন দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে আমাদের। বাবাও অসুস্থ। এক মাস আগে মায়ের পায়ে ব্যথা শুরু হয়। তখন ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানোর পর থেকে পায়ে পচন ধরেছে। চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। এখন পায়ের মাংস পচে পুজ বের হচ্ছে। রোগটির নাম ডাক্তার বলতে পারছে না। তবে ডাক্তার বলেছেন, পা কেটে ফেলতে হবে। আমার বাবার টাকা নেই। পা কাটার টাকা নেই বাবার কাছে।
ফাহিমা খাতুনের প্রতিবেশী ও দেয়াড়া ইউনিয়নের স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য আকলিমা খাতুন বলেন, পায়ে ব্যথা শুরু হলে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাক্তার জাফর উল্লাহকে দেখানো হয়। তিনি ওষুধপত্র দেন। ওষুধ খাওয়ার পর পচন ধরতে শুরু করে। বর্তমানে পায়ের মাংস খসে খসে পড়ছে তার। সেখান থেকে পুজ ও পোকা বের হচ্ছে। ওই ডাক্তারের কাছে রহিমাকে নিয়ে গেলে তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন, পা কেটে বাদ দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এরপর যশোরের এক হোমিও ডাক্তারকে দেখানো হচ্ছে। হোমিও ডাক্তারের ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথা একটু কমেছে তবে পচন ধরা অংশ কমেনি। বাম পায়ের হাটু থেকে ও ডান পায়ের হাটুর নিচ থেকে একে বারেই পচে গেছে।
ফাহিমা খাতুন জানান, এক মাস আগে প্রথমে আমার বাম পায়ের বুড়ি আঙ্গুলে যন্ত্রণা শুরু হয়। এরপর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর কি হয়ে গেল কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমি সুস্থ হতে চাই।
দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ফাহিমা খাতুনের অবস্থার কথা জেনে তাদের বাড়িতে গিয়ে কিছু চিকিৎসার সহায়তা করেছি। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের একটি ভিজিডি কার্ড করে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।
রোগের বিবরণ শুনে ও ছবি দেখে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ইনফেকশন হয়ে সম্ভবত গ্যাংগ্রিন হয়েছে। চামড়া ফেলে নতুন চামড়া লাগিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব। এছাড়া রোগীকে সরাসরি না দেখে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে ০১৭০৪৬৬১৯৭২ নম্বরে।
আকরামুল ইসলাম/এমএএস/পিআর