শ্রেণিকক্ষে রোদ-বৃষ্টির মিতালী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বাঁশ দিয়ে তৈরি ঘরের বেড়া ও দরজা-জানালা ভেঙে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরের চারপাশসহ চালা দিয়ে অঝরে ঝরছে পানি। অন্যদিকে রৌদ্রের তাপও অনায়াসে প্রবেশ করছে ঘরটিতে। এভাবেই বছরজুড়ে রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে মিতালি করে পাঠদান চলছে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের ঘরটিতে। পার্বত্য খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা সদরের খুব কাছাকাছি জিয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি।

২০০১ সালের দিকে ১৭৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে স্থানীয় উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে জিয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে স্থানীয়দের অর্থায়নে বাঁশ, কাঠ ও টিনের সমন্বয়ে এক কক্ষ বিশিষ্ট বেড়ার ঘরে পাঠদান শুরু হয়। পররর্তীতে ২০০৫ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। এরপর একযুগ পেরিয়ে গেলেও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি উপজেলা সদরের কাছাকাছি গ্রামের এ বিদ্যালয়টিতে। এমনটাই জানালেন কর্মরত শিক্ষকসহ স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ২০১১ সালে শতভাগ সরকারিকরণ হওয়া এ বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০৮ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। প্রধান শিক্ষকসহ চার জন শিক্ষক কর্মরত আছেন বিদ্যালয়টিতে। তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকা ভবনে ছয়টি শ্রেণির পাঠদান সম্ভব নয় বলে জীর্ণ ভাঙা বেড়ার ঘরসহ দুই শিফটে চলে পাঠদান কার্যক্রম। অনেক সময় ঝড়-বৃষ্টি হলে পাঠদান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে বিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা যায়, তিন কক্ষবিশিষ্ট ভবনের একটি কক্ষ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অপর দুটি কক্ষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হলেও ভাঙা বেড়ার ঘরে চলছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।

বিদ্যালয়টির দুই সহকারী শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন ও বিউটি সাহা জানান, বিদ্যালয়টিতে পাঠদান কার্যক্রম চালানোর জন্য ছয়টি কক্ষের প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র দুটি। ফলে তারা বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের ভাঙা বেড়ার ঘরেই পাঠদান করান। যেখানে পাঠদানের নেই উপযুক্ত কোনো পরিবেশ।

দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে জিয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির চাকমা জানান, ভবন সঙ্কটে কোনো রকমে চলছে পাঠদান। ভাঙা বেড়ার ঘরটি পাঠদান উপযোগী নয়। বর্ষাকালে শ্রেণিকক্ষ জুড়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বারবার আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি বলেও জানান তিনি।

বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে জানিয়ে পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী অরুন কান্তি দাশ জানান, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।