অপারেশনের টেবিলে রোগীর মৃত্যু, ৫ লাখ টাকায় সমঝোতা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নওগাঁ শহরের বেসরকারি ক্লিনিক ‘হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে’ অপারেশনের সময় হাফিজুর রহমান (৩২) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর রোগীর আত্মীয়-স্বজন ক্লিনিক ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। অনেক দেনদরবারের পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে সমঝোতা করে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শহরের কাজীর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হাফিজুর রহমান সদর উপজেলার ফতেরপুর ইউনিয়নের আদম দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হাসেম আলির ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাফিজুর রহমান পিত্তথলির অপারেশেনের জন্য মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ‘হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে’ ভর্তি হন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। এ সময় অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. ইসকেন্দার হোসেন, সার্জন ডা. আব্দুস সোবহান ও কার্ডিওলজিস্ট রোগীর অপারেশন করেন এবং ডা. এমআর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অপারেশন শেষে ৭টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত রোগীর জ্ঞান না ফেরায় অপারেশন টেবিলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নিহতের পরিবারের সদস্যরা ক্লিনিক ঘেরাও করলে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গভীর রাত পর্যন্ত দেনদরবারের পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের দুই শিশু সন্তান রিয়াদ ও জিহাদের নামে পাঁচ লাখ টাকার চেক ইস্যু করে।

নিহতের ছোট ভাই রাহেল বলেন, আমার ভাইয়ের হার্টের সমস্যা ছিল না। অপারেশনের আগে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলাম। অপারেশনের জন্য সার্জনের সঙ্গে ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং ক্লিনিকের সঙ্গে ৫ হাজার ৫০০ টাকা চুক্তি করেছিলাম। এছাড়া নিজস্বভাবে ওষুধ কেনার কথা ছিল। কিন্তু অপারেশনে কোনো ভুলের কারণে হয়ত ভাই মারা গেছে। যদি কোনো সমস্যা থাকতে তাহলে আগে বললে অপারেশন করাতাম না। ভাইয়ের দুই ছেলের নামে ক্লিনিক মালিক ৫ লাখ টাকার চেক ইস্যু করেছেন।

ক্লিনিকের পরিচালক নাজমুল হুদা জুয়েল বলেন, কোনো ভুল অপারেশন হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। অপারেশন শেষে রোগীর আর জ্ঞান ফিরেনি। অপারেশন টেবিলে রোগী হৃদযন্ত্রের ক্রীয়া বন্ধ (স্ট্রোক) হয়ে মারা গেছে। তবে মানবিক দিক দিবেচনা করে নিহতের দুই সন্তানের নামে ৫ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক অপারেশনের সময় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ মন্ডল বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আপসের টাকার জন্য ১৫ দিন সময় নিয়েছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

আব্বাস আলী/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।