হাসপাতাল থে‌কে বে‌রিয়ে রাস্তার পা‌শেই সন্তান প্রসব

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০২:৩৭ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

প্রসব বেদনায় গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ‌র্তি হওয়া প্রসূতিকে ফরিদপুর মে‌ডিকেল ক‌লেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হ‌লেও অ‌র্থের অভাবে হাসপাতা‌লে না গি‌য়ে যান ক‌বিরাজের দরবা‌রে।‌ সেখা‌নে ওই প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হ‌য়ে পড়েন। এরপর স্থানীয় ক‌য়েকজন নারীর সহায়তায় রাস্তা‌র পাশেই স্বাভা‌বিকভা‌বে এক‌টি ফুটফু‌টে কন্যাসন্তা‌নের জন্ম হয় তার।

ঘটনা‌টি ঘ‌টে‌ছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লার পাড়া এলাকায়। এতে এলাকায় চাঞ্চ‌ল্যের সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।

জানা‌ গে‌ছে, উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মন্ডল পাড়ার দরিদ্র মাছ ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীর গর্ভবতী স্ত্রী আলেয়া বেগমের (৩৫) প্রসব যন্ত্রণা ও‌ঠে সোমবার। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন তাকে গোয়ালন্দ উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে ভর্তি করে।

রাতে চিকিৎসা চললেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস চন্দ্র মন্ডল গর্ভবতী মা‌য়ের অবস্থা জটিল এবং সেখানে গাইনি ডাক্তার না থাকায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

ফরিদপুর হাসপাতা‌লে যাওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা না থাকায় অভিভাবকরা গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লার পাড়া এলাকায় কথিত এক পাগল ক‌বিরা‌জের কাছে নিয়ে যায়। সেখা‌নে নেয়ার পর ওই প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

অবস্থা বেগতিক দেখে গ্রামের আসমা খাতুন, মাজেদা বেগম, তানিয়া আক্তার, আশা আক্তার, চায়না আক্তারসহ কয়েকজন এগিয়ে আসেন এবং তাদের সহায়তায় রাস্তার পা‌শেই মা আলেয়া বেগম একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। প‌রে সন্তানসহ ওই মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বাড়িতে আসার পর অসুস্থ হ‌য়ে পড়লে নবজাতকসহ মাকে আবারও গোয়ালন্দ উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আলেয়া বেগমের স্বামী আইয়ুব আলী জানান, সামান্য মাছের ব্যবসা ক‌রে তি‌নি সংসার চালান। সন্তানসম্ভাবা স্ত্রী অসুস্থ হ‌য়ে পড়‌লে সোমবার সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি ক‌রে রেখে আসেন তিনি। ‌কিন্তু সকালে তাকে ফ‌রিদপু‌রে রেফার্ড করা হয়। ত‌বে রেফার্ড করা ও পাগলের দরবারে যাওয়ার বিষয়‌টি তি‌নি পরে শুনেছেন।

গোয়ালন্দ উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সের আবাসিক ডা. তাপস চন্দ্র মন্ডল বলেন, ওই প্রসূতির পানি ভেঙে পেটে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হয়। আমরা তার কিছু পরীক্ষা করাতে চাইলেও তারা রাজি হচ্ছিলেন না। পরে সকালে তাদের আগ্রহেই ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার্ড করি। তাছাড়া আমাদের এখানে গাইনি সার্জন নেই। হাসপাতাল থেকে যাওয়ার পর তারা কোথায় গেলেন তা আমার জানা নেই।

রু‌বেল‌ুর রহমান/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।