বন্যার উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ


প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৫

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে। ধরলা, তিস্তা, ব্রক্ষপুত্র, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র পাঁচ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। নদ-নদীগুলোর পানি কমে যাওয়ায় শুরু হয়েছে ভাঙন। এছাড়াও বানভাসী পরিবারগুলোর মাঝে দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। দুর্গম চর ও দ্বীপ চরগুলোতে ত্রাণ সহায়তা না পৌঁছায় খাদ্য সঙ্কটে পড়েছে বানভাসীরা। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার আট ইউনিয়ন। এ দুই উপজেলার কাঁচা-পাকা সড়ক ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

জিঞ্জিরাম নদীর তীব্র স্রোতে রৌমারীর সুতির পাঠ গ্রামের ১০টি বাড়ি ভেঙে গেছে। রৌমারী শৌলমারী সড়কের সুতিরপাড় ও বাবুনের চর নামক স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে। এতে নওদাপাড়া, নুতন বন্দর, ব্যাপারীপাড়া, খাটিয়ামারী, রতনপুর, মোল্লারচর, বোল্লাপাড়া, বাবনেরচর, মণ্ডলপাড়া এলাকার কয়েক হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

শৌলমারী ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদীর তীব্র স্রোতে গত ২৪ ঘণ্টায় চেংটাপাড়া বাঁধের ২৫০ ফুট, চরের গ্রামে ১৫০ ফুট এবং সুতিরপার এলাকায় ১শ ফুট ভেঙেছে। এ ইউনিয়নে সাতটি বাশের সাঁকো বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে। শৌলমারী উচ্চ বিদ্যালয়, চর বোয়ালমারী, চরেরগ্রাম, গয়াটারপাড়া বাঁধের রাস্তায় আশ্রিত বন্যার্তরা এখনো বাড়িতে ফিরতে পারেননি।



জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার নয় উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬০ ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। এসব বানভাসীর জন্য ৮০ মেট্রিকটন চাল ও ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা এখনো বিতরণ শেষ হয়নি।

জেলা প্রশাসক খাঁন মো. নুরুল আমীন জাগো নিউজকে জানান, ইতোমধ্যে বন্যার্তদের জন্য ৮০ মেট্রিকটন চাল ও ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ করা হচ্ছে। নতুন করে আরো ১শ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শওকত আলী সরকার জাগো নিউজকে জানান, জেলার নয় উপজেলার ৫৩ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত গত ছয় দিন ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কী পরিমাণ জমির আমন ক্ষেত সম্পূর্ণরূপে ক্ষতি হতে পারে তা নিরূপণ করা হবে। এজন্য কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

নাজমুল হোসেন/এমজেড/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।