ডাস্টবিনে ৩১ নবজাতকের লাশ : গঠিত হচ্ছে তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ১১:২৪ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পশ্চিম পাশের ড্রেন ও ডাস্টবিন থেকে অপরিণত ৩১ শিশুর মৃতদেহ ও মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উদ্ধার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন।

সোমবার রাত ৮টার দিকে এসব মৃতদেহ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া যায়। যার অধিকাংশই ছিল বোতলজাত। এদিকে রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহগুলোর সুরতহাল শুরু করেছে।

হাসপাতালসংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালে জন্ম নেয়া অপরিণত শিশুর মৃতদেহ কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য মেডিসিনের মাধ্যমে বোতলে ভরে রাখা হয়। ১৫/২০ বছর পূর্বে অপরিণত এসব শিশুর মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হয়। ওই বোতলগুলো গাইনি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ছিল। তাছাড়া বোতলে থাকা মেডিসিনের মেয়াদও শেষপর্যায়ে থাকায় তা মাটিচাপা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওয়ার্ড-বয়রা কোনো কিছু না বলে হাসপাতালের পেছনে ডাস্টবিনে স্তূপকারে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে টোকাইরা সেখান থেকে অপরিণত শিশুর মৃতদেহ ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের লোকজন হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ময়লা অপসারণ করতে গেলে জরুরি বিভাগসংলগ্ন পানির টাংকির নিচ থেকে অপরিণত শিশু এবং মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে শত শত মানুষ ভিড় করে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কলেজের গাইনি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মৃত শিশু এবং মানবদেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষিত থাকে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে শেখানোর জন্য এগুলো ব্যবহার হয়।

পরিচালক বলেন, যেগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেগুলো নিয়মানুযায়ী মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়। কিন্ত গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশিদ জাহানের নির্দেশে ওই বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির নারী কর্মচারীরা শিশু ও মানবদেহের অঙ্গগুলো মাটিতে না পুঁতে ড্রেন ও ডাস্টবিনে ফেলেছে। যা মোটেই ঠিক হয়নি।

অধ্যাপক ডা. বাকির বলেন, বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি ও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কেন এমনটা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যার যার বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার প্রমাণ মিলবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনাস্থলে থাকা কোতয়ালী থানা পুলিশের এসআই মো. রফিকুল ইসলাম জানান, অপরিণত মৃতদেহগুলো সুরতহাল করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইনগতভাবে যা করণীয় তা করা হবে।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাইফ আমীন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।