দুই কর্মকর্তার নাম লিখে বিআরডিবির নারী কর্মকর্তার আত্মহত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ফেনীতে বিআরডিবির এক নারী কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাতে ফেনী শহরের বারাহিপুরের ভাড়া বাসা থেকে ফুলগাজী উপজেলা বিআরডিবির মাঠ কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমের (৫২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের পায়েরখোলা এলাকার প্রবাসী মো. এয়াছিন মজুমদার দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে বর্তমানে ফেনী পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম গত প্রায় ২৫ বছর ধরে ফেনীর ফুলগাজী বিআরডিবির (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড) মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। শুক্রবার রাতে নিজঘরে স্ত্রীর মরদেহ ঝুলতে দেখে স্বামী এয়াছিন চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন সেখানে গিয়ে ফেনী মডেল থানায় খবর দেন।

পরে পুলিশ গিয়ে আনোয়ারার নিথর দেহ উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ফেনী মডেল থানা পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, লাশের পাশ থেকে পুলিশ একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করেছে। সেখানে ফেনীতে কর্মরত বিআরডিবির উপ-পরিচালক শংকর কুমার পাল ও ফুলগাজী উপজেলা বিআরডিবির সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষ্ণ গোপাল রায়ের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনার জন্য তাদের দায়ী করা হয়েছে।

চিঠিতে আনোয়ারা বেগম ফেনী-২ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্যকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য বিআরডিবি ফেনী সদর এর ডিডি শংকর কুমাল পাল ও ফুলগাজীর এআরডিও কৃষ্ণ গোপল রায় দায়ী। তারা দু’জনে গত চার মাস ধরে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি চার মাস আমাকে বেতন-ভাতা দেয়নি। এর মধ্যে গত ৩১শে জানুয়ারি আমি ঋণ নিয়েছি মর্মে জোর করে আমার থেকে স্বীকারোক্তি ও অঙ্গীকারনামা লিখিয়ে নেন ডিডি শংকর কুমার পাল। এরপর আমি স্ট্রোক করলে আমাকে ঢাকা নেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে ৭ দিন পর আমি বুধবার ফেনী ফিরে আসি।’

পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ারার একমাত্র ছেলে এয়ামিন মজুমদার পলাশ রাজধানীতে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আর একমাত্র মেয়ে শারমিন আক্তার নুপুর চট্টগ্রামে স্বামীর সঙ্গে থাকেন।

এদিকে সুইসাইড নোটে অভিযুক্ত বিআরডিবির দুই কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।

ফেনী মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে লিখিত এজাহার দেয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাশেদুল হাসান/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।