দুর্ব্যবহার সইতে না পেরে মালিক দম্পতিকে গলা কেটে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গবাদীপশুর খামারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. নজরুল ইসলাম (৬৫) ও তার স্ত্রী সালমা বেগমকে (৫৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনার দশ দিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে হত্যাকারী ওই খামারের কেয়ারটেকার আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে কেয়ারটেকার আব্দুর রাজ্জাক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নীলফামারী চিফ জুডিশিয়াল আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের এজলাসে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে জেলহাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আব্দুর রাজ্জাক (৪০) নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জবানবন্দিতে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভেড়া ও গরুর এই খামার প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি সেখানে কর্মরত। খামারের মালিক, স্ত্রী ও ছেলেরা তার সঙ্গে প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করতেন। ঠিকমতো বেতন দিতেন না। রোগে আক্রান্ত হয়ে খামারের কোনো ভেড়া মারা গেলে ভেড়ার দাম বেতন থেকে কেটে নিতেন। ছুটি চাইলে তারা ছুটিও দিতেন না। এমনকি ছোটখাটো দোষত্রুটি পেলে মারধরও করতেন।

ঘটনার দিন ২৬ জানুয়ারি রাতে খামারের মালিক নজরুল ইসলামের কাছে ৭ দিন ছুটি চেয়ে বাড়ি যেতে চাইলে মালিকের স্ত্রী সালমা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। তবুও তিনি কিছু বলেননি। ওই রাতে খামারে একটি ভেড়া অসুস্থ হয়ে পড়লে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় মালিকের ঘরে গিয়ে তাদের ডাক দেন। কিন্তু সালমা বেগম ঘুম থেকে উঠে এসে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।

এতে তিনি নিজেকে আর সংযত করতে না পেরে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করেন। স্ত্রীর চিৎকারে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন খামার মালিক নজরুল ইসলাম। স্ত্রীকে রক্তাক্ত দেখে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে (কেয়ারটেকার) আঘাত করলে পাল্টা আঘাত করে তাকেও হত্যা করেন। পরে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাদের গলা ও পায়ের রগ কেটে দেন আব্দুর রাজ্জাক।

উল্লেখ্য, সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামে হাজী আসলামের জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলা ভেড়ার খামারে গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ওই হত্যাকাণ্ডের পর হত্যাকারী কেয়ারটেকার আব্দুর রাজ্জাকও সেখানে আহত অবস্থায় পড়েছিলেন। তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল।

ওই ঘটনায় ২৮ জানুয়ারি ৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়। আসামি করা হয় কেয়ারটেকার আব্দুর রাজ্জাক, খামারের জমির মালিক হাজী আসলামের ছেলে সজল, তার বন্ধু সুজাত ও কাউয়াকে।

কেয়ারটেকার আব্দুর রাজ্জাককে পুলিশি হেফাজতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলে হাসপাতালেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন।

জাহিদুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।