অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গৃহকর্মীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ১০:০৭ এএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর হাউজিং এলাকায় অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় রাহেলা বেগম (১৯) নামে এক গৃহকর্মীকে বাসায় আটকে রেখে অ্যাসিডে শরীর ঝলসে দেয়ার পাশাপাশি অমানুষিক নির্যাতন করে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচে ফেলে রাখা হয়। পরে স্বজনের তাকে উদ্ধার করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

নির্যাতনের শিকার রাহেলা বেগমের গ্রামের বাড়ি হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের চরনঙ্গলিয়া এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তার প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাহাব উদ্দিন, মিজানুর রহমান সুমন, আলেয়া বেগম ও রীনা আক্তার নামে চারজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

রাহেলা বেগমের পরিবার জানায়, তাদের প্রতিবেশি রিনা আক্তার প্রায় চার মাস আগে রাহেনাকে বাসায় কাজ দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী নিয়ে যান। এরপর রিনা তার পরিচিত আলেয়া বেগম নামে এক নারীর বাসায় তাকে কাজে দেন। প্রথম মাস আলেয়ার বাসা ছিল মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখান থেকে তিন মাস আগে বাসা পরিবর্তন করে শহরের বালুরমাঠ-সংলগ্ন মাইজদী হাউজিং এস্টেটে একটি নতুন বাসা ভাড়া নেন। ভালোভাবেই ওই বাসায় কাজ করেছিলেন রাহেনা বেগম। কিন্তু মাস খানেক আগে গৃহকর্ত্রী তাকে বাসায় অসামাজিক কাজ করার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হলে তার ওপর অসমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।

নির্যাতনের শিকার রাহেলা জানান, তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে পুরো শরীরে আঘাত করা হয়। মুখের ভেতর ওপরের পাটির বেশ কয়েকটি দাঁত তুলে ফেলা হয়। তারপরও তিনি অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গত প্রায় ৮-১০ দিন আগে রাতের বেলায় তার শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেয়া হয়। এতে তার বুক, পেট, পিটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে ঝলসে যাওয়া শরীরের অংশে পচন ধরলে তাকে বাসযোগে চট্টগ্রাম নিয়ে কালুরঘাট এলাকার একটি ব্রিজের নিচে ফেলে আসা হয়।

রাহেলার ভাই জাকের হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে তার বোন একবার ফোন করে জানিয়েছিল তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। পরে আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনি ঘটনরা সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, যেহেতু মেয়েটির গায়ে ক্ষত রয়েছে এবং তার গায়ে অ্যাসিড দেয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে সে জন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সুধারাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাতেই তিনি হাসপাতালে রাহেলাকে দেখতে যান। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।

মিজানুর রহমান/আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।