হারকিউলিসের হাতে নিহত রাকিব গণধর্ষণের মূল হোতা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পিরোজপুর
প্রকাশিত: ০৭:০৬ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় মাদরাসা ছাত্রী গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রাকিব মোল্লার (২০) গুলিবিদ্ধ লাশ শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করেছে রাজাপুর থানার পুলিশ। তিনি উপজেলার ২নং নদমুলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড চিংগুরিয়া ভিটাবাড়িয়ার আ.কালাম মোল্লার ছেলে।

নিহত রাকিব ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে মাদরাসা ছাত্রী গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি তিনি।

শুক্রবার দুপুরে উপজেলার রাজাপুর সদর ইউনিয়নের আঙ্গারিয়া গ্রামের রাজাপুর-কাঠালিয়া সংযোগ সড়কের পূর্ব পাশের ধানক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার বুকে একটি কাগজের চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা রয়েছে ‘আমি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার (মাদরাসা ছাত্রীর-নাম গোপন করা হলো) ধর্ষক রাকিব। ধর্ষণের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকরা সাবধান। হারকিউলিস’

পুলিশ জানায়, গত ৬ দিন আগে একই গণধর্ষণ মামলার ২ নম্বর আসামি সজলের (২৫) লাশও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঝালকাঠীর কাঠালিয়া উপজেলার বিনাপানি বাজার সংলগ্ন বলতলা গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়। সে উপজেলার নদমুলা গ্রামের শাহ আলম জোমাদ্দারের ছেলে।

সজল জোমাদ্দারকেও হত্যা করে তার গলায়ও চিরকুট বেঁধে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল ধানক্ষেতে। ওই ঘটনায় সজলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে নিহতের বাবা শাহ আলম জোমাদ্দার বাদী হয়ে ২৯ জানুয়ারি কাঠালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ধর্ষণের শিকার মাদরাসা ছাত্রীর বাবাসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত সজল জোমাদ্দার বাংলালিংক কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে ঢাকার বাড্ডা এলাকায় বসবাস করতেন। গত ২২ জানুয়ারি তাকে অপহরণ করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

রাজাপুর থানা পুলিশের ওসি মো. জাহিদ হোসেন জানান, দুপুর ১২টার দিকে এক কৃষক ওই পথদিয়ে মাঠে যাওয়ার সময় রাকিবের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের জানালে তারা থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ ও লাশের শরীরে চিরকুট দেখে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশকে অবগত করে তার পরিচয় জানতে পারেন এবং কে বা কারা তাদের হত্যা করে লাশ ফেলে গেছে সেই বিষয়ে কিছুই বলতে পারছে না পুলিশ।

রাকিবের লাশের সঙ্গে চিরকুটে হত্যাকারী নিজের পরিচয় হিসেবে লিখে রেখে গেছে গ্রিক পুরানের বীর হারকিউলিসের নাম। রাকিবের মাথায়, মুখে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। রক্তাত্ত গুলির জখমের চিহ্ন বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি সকালে ভান্ডারিয়া উপজেলার হেতালিয়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে এক মাদরাসা ছাত্রীকে হেতালিয়া গ্রাম সংলগ্ন একটি পানের বরজে নিয়ে দলবেঁধে গণধর্ষণ করা হয়। এবং সেই দৃশ্য ধর্ষকরা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দেয়। কারণ যাতে এ ঘটনা কাউকে জানানো না হয় বা কোনো প্রকার আইনের আশ্রয় নেয়া না হয়। এ ঘটনায় মেয়েটির পরিবার ঘটনার তিনদিন পর ১৭ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। ওই মামলায় আবুল কালাম মোল্লার ছেলে রাকিব হাসান ও আলম জোমাদ্দারের ছেলে সজল জোমাদ্দারকে আসামি করা হয়।

ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. শাহাবুদ্দিন জানান, মামলার পরে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম শেষ।

হাসান মামুন/এমএএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।