বাসন্ডা খালের গলার কাঁটা বালুর চর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

ঝালকাঠির প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া বাসন্ডা নদীর পূর্বপ্রান্ত আড়ৎদার পট্টি। সড়ক পথের চেয়েও নৌপথে মালামাল পরিবহন ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু বাসন্ডা নদীর প্রবেশদ্বারে চর পড়ায় পণ্যবাহী নৌ-যান ঢুকতে পারছে না। ফলে সুগন্ধা, বিষখালি ও গাবখান নদীর মোহনায় পণ্যবাহী নৌযান নোঙর করে ছোট ট্রলার অথবা নৌকায় করে মালামাল সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।

জানা গেছে, সুগন্ধা, বিষখালি ও গাবখান নদীর মোহনায় খননকৃত বালুতে ভরে গেছে বাসন্ডা নদীর প্রবেশ মুখ। এতে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চিনি, গমসহ মালামাল বহন করে নিয়ে আসা জাহাজ ও কার্গো ঝালকাঠির এ নদীতে প্রবেশ করাতে পারছে না। ফলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে জাহাজ নোঙর করে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও নৌকায় মালামাল নামাতে সময় ও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

বিষয়টি অবগত করে ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে খালের মুখ থেকে দ্রুত বালু অপসারণ করতে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য রূপপুর থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত নৌ রুটের ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণাঞ্চলের বিশেষ করে ঝালকাঠির সুগন্ধা, গাবখান ও ধানসিড়ি নদীর মোহনায় জেগে ওঠা বিশাল চর ও গাবখান চ্যানেলের ভিতরে ডুবচর অপসারণ এবং প্রশস্ততা বৃদ্ধির জন্য খনন কাজ শুরু হয় গত আগস্ট মাসে।

বিআইডব্লিউটিএ ঠিকাদারের মাধ্যমে ড্রেজার দিয়ে এ খনন কাজ করাচ্ছে। প্রথম দফায় সামান্য কিছু কাজ করলেও দ্বিতীয় দফার কাজ শুরু করে। ড্রেজারের কাটা চরের মাটি ও বালু নদী সংলগ্ন জমিতে বেড়িবাঁধ দিয়ে রাখা হলেও বাঁধ ভেঙে তা বাসন্ডা নদীর প্রবেশ মুখে পড়ে। এতে সেখানে চরের সৃষ্টি হওয়ায় নৌযান প্রবেশে করতে পারছে না।এমনকি সেখানে কোনো চিহ্ন না থাকায় ভাটার সময় সেখান থেকে চলাচল করা নৌযান আটকে পড়ছে। এতে ঝালকাঠির ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি আড়ৎদার পট্টির মদীনা ফ্লাওয়ার মিলের মালামাল খালাস করা শ্রমিক সর্দার রিন্টু হাওলাদার জানান, এখন প্রতি টন মাল নামাতে মালিক পক্ষকে গুণতে হচ্ছে ৩৬৫ টাকা। কিন্তু জাহাজ খালের ভিতরে গেলে প্রতি টনে নেয়া হতো ২৬০ টাকা।

ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদ সালেক জানান, বিআইডব্লিউটিএর ঠিকাদার ড্রেজার দিয়ে এ চর কাটছে। তারা ৪শ ফিট বালু খালের প্রবেশ মুখ দিয়ে সরিয়ে দিলেই আমাদের সমস্যার সমাধান হতো। এখন ১২শ টনের জাহাজ এ খালে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে আমরা বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছি।

আতিকুর রহমান/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।