স্বামীর লাশ ওয়ারড্রবে রেখে অফিস করলেন স্ত্রী

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক শ্রীপুর (গাজীপুর)
প্রকাশিত: ১২:৩৬ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

স্বামীর পাশাপাশি চাকরি করতেন স্ত্রী জেবুন নাহারও। যা বেতন পেতেন তা থেকে প্রতিমাসে নিজের মা-বাবাকে কিছু টাকা দিতে চাইতেন তিনি। কিন্তু বাধ সাধেন স্বামী রফিকুল ইসলাম শেখ। শুধু বাধাই নয়, ওইসব ঘটনায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধরও করেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন জেবুন নাহার।

এক পর্যায়ে স্বামীর ওপর আক্রোশ জমে তার মনে। ফের ঝগড়া হলে সেই আক্রোশের বশবর্তী হয়ে স্বামীকে হত্যা করেন। এমনকি হত্যার পর স্বামীর মরদেহের ওপর ঠান্ডা মাথায় চালান নৃশংসতা।

শুক্রবার রাতে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোমহর্ষক ওই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন জেবুন নাহার। আজ শনিবার জেবুন নাহার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা।

এসআই শহিদুল ইসলাম মোল্লা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেবুন নাহার জানিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার সকালে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় তার (জেবুন)। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ইট দিয়ে রফিকুলের মাথায় আঘাত করেন তিনি। এতে রফিকুল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রফিকুলকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহটি ঘরের ওয়ারড্রবের ভেতর রেখে কর্মস্থলে চলে যান। এ সময় তাদের মেয়েটি পাশেই জেবুন নাহারের ছোট বোনের বাসায় ছিল।

রাত ৮টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফিরে ১১টা পর্যন্ত তিনি বোনের বাসায় ছিলেন। সেখানেই রাতের খাবার খান জেবুন। রাত ১১টার দিকে নিজের বাসায় গিয়ে রান্নাঘরের বটিতে শান দেন। এরপর ওয়ারড্রব থেকে স্বামীর মরদেহ বের করে প্রথমে দুই পা কাটেন। পরে দুই হাত কেটে মাথাও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।

৬ টুকরো করা মরদেহটি গুমের উদ্দেশ্যে একটি বস্তায় ভরে ফেলেন। পরে দুই হাত ও বিচ্ছিন্ন মাথা ময়লার ড্রামে ফেলেন। এরপর বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে ময়লার ভাগাড়ে বস্তাবন্দি দেহটি ফেলে আসেন। এর প্রায় ৪০০ গজ দূরে শৌচাগারের পেছনে নিয়ে ফেলেন পায়ের দুটি টুকরো। শৌচাগারের পাশে দুই হাত ও খণ্ডিত মাথা রাখা ড্রামটিও ফেলে যান। সবশেষে ব্যবহৃত বটিটিও বাইরে লুকিয়ে রাখেন জেবুন নাহার।

এসআই শহিদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, জেবুন নাহারের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাতেই নৃশংসতায় ব্যবহৃত বটিটি জব্দ করা হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামের বাবা আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে জেবুন নাহারকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।

শিহাব খান/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।