রাজবাড়ীতে কিশোরী ধর্ষণ, মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন


প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০১৫

রাজবাড়ীতে চাচার বাড়িতে বেড়াতে এসে চাচির প্ররোচণায় এক কিশোরী (১৫) ধর্ষণের শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় চুলের মুঠি ধরে বেধরক মারপিট করে গরু বাঁধার রশি দিয়ে ময়লা আবর্জনার স্থানে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।

বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের বেলগাছী এলাকার খোশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে রোববার ঘটনাটি জানাজানি হয়। কিশোরীর বাড়ি পাবনা জেলায়।

এলাকাবাসী সূত্র জানা গেছে, খোশবাড়ি গ্রামে রিকশাচালক হোসেন আলী মোল্লার বাড়িতে বেড়াতে আসে ওই কিশোরী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চাচি হাজেরা বেগমের সহায়তায় এলাকার অজ্ঞাত এক বখাটে যুবককে দিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করায় এমন অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনা জানাজানি হলে মেয়ের চাচা হোসেন আলী ঢাকা থেকে রাজবাড়িতে এসে ভাতিজিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মিথ্যা অপবাদ নিয়ে গ্রামবাসীর সামনে চুলের মুঠি ধরে বেধরক পিটুনি দেয়। এরপর মেয়েটিকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ের ময়লা আবর্জনার স্থানে একটি গাছের সঙ্গে গরুর রশি দিয়ে বেঁধে রাখে।

অন্য জেলা থেকে রাজবাড়ির বেলগাছী এলাকায় বেড়াতে আসা মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনা ও এমন পাষবিক নির্যাতন দেখে ক্ষোভে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী বলেন, আমি বৃহস্পতিবার চাচার বাড়িতে বেড়াতে আসি। চাচা তখন ঢাকায়। কিছুক্ষণ পর একটা লোক আসে চাচার বাড়িতে। লোকটি আসাতেই আমার চাচি বাড়ি থেকে চলে যায়। ওই মুহূর্তে বসত ঘরে সে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা পর চাচি বাড়িতে এলে আমি বলি আপনি তখন কেন ওই লোকটি রেখে চলে গেলেন। আপনি সাহস না দিলে সে কিছুতেই আমার কাছে আসার সাহস পেতো না। আমি সবার কাছে এর বিচার চাই।


কিশোরী জানান, আমার চাচা বাড়িতে এলে আলাদাভাবে কথা বলতে চাইলে আমাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। চাচি আমাকে খারাপ জায়গায় পাঠাতে চায় কিন্তু আমি তাতে রাজি হয়নি। এরপর আমাকে অনেক মেরেছে এবং গরু বাঁধার রশি দিয়ে পিঠমোরা করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে।

এক প্রতিবেশী জানান, সকালে আমার বাড়ির ওপর মেয়েটিকে তার চাচা যেভাবে মারছিল তা ছিল অমানবিক। তখন আমি আমার বাড়ি থেকে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছি। এর বিচার হওয়া উচিত।

খানগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাহার হোসেন তকদির জানান, বিষয়টা আমার জানা ছিল না। তবে আপনাদের কাছে যে ছবিটি দেখলাম তাতে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার মতো। কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত।

এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং রোববার রাতে মেয়েটি বাদী হয়ে চাচা, চাচি ও অজ্ঞাত ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পুলিশ মেয়েটির চাচা হোসেন আলী মোল্লা ও চাচি হাজেরা বেগমকে আটক করেছে।

রুবেলুর রহমান/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।