কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিট গ্রহণের তারিখ পিছিয়েছে
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলার চার্জশিট গ্রহণের তারিখ পিছিয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার মামলার নির্ধারিত তারিখে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানার আদালত নতুন তারিখ ধার্য্য করেন। এ সময় আদালতে হাজিরা দেন মামলার প্রথম চার্জশিটভূক্ত উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকা আসামি জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি একেএম আব্দুল কাইয়ূমসহ ৮ জন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১২ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেছা পারুল কিবরিয়া হত্যকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় কারাগারে আটক সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের মেয়র (বরখাস্তকৃত) আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র (বরখাস্তকৃত) জি কে গউছসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত ১ জুন তাদের গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন। ইতোমধ্যে তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছেন। এ মামলায় হত্যা মামলার চার্জশিটভূক্ত ৩৫ জনকেই আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মারা গেছে আরও দু’জনের নাম ঠিকানা সঠিক না পাওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়। বাকি ৩২ জন আসামির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (বরখাস্তকৃত) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র (বরখাস্তকৃত) জি কে গউছ, হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও মাওলানা তাজ উদ্দিন। তাদের মধ্যে হারিছ চৌধুরীসহ ৯ জন পলাতক, লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরী ও জি কে গউছসহ ১৫ জন কারাগারে ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি একেএম আব্দুল কাইয়ূমসহ ৮ জন জামিনে রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের সিআইডির সিনিয়র এএসপি মেহেরুন্নেছা পারুল জানান, দু’টি মামলাই একই ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শেষে গত ১০ আগস্ট তিনি আদালতে বিস্ফোরক মামলাটির চার্জশিট জমা দিয়েছেন। এ চার্জশিটেও হত্যা মামলার আসামিদেরই আসামি করা হয়েছে। এখানে কোনো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন নেই।
কিবরিয়া হত্যা মামলার আইনজীবী আলমগীর ভূঁইয়া বাবুল জাগো নিউজকে জানান, বাদী পক্ষের নারাজির প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন বিস্ফোরক মামলাটির কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত ছিল। পরে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এ মামলাটিও তদন্তের জন্য দেয়া হয়। যেহেতু দু’টি মামলাই একই ঘটনায় দায়ের করা সেহেতু দু’টিরই তদন্তের ফলাফলও একই হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। এতে আহত হন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপিসহ ৪৩ জন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান এমপি বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলাটি বর্তমানে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
খোকন/এমএএস/আরআইপি