বনদস্যুদের চাঁদা দিয়েই মৎস্য শিকার


প্রকাশিত: ০৪:৩১ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৫
ফাইল ছবি

সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের পুষ্পকাটি বন টহল ফাঁড়িতে কর্মরত কর্মকর্তা এবং বনদস্যুদের চাঁদা দিয়েই জেলেরা মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছেন। আর বনদস্যুরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এ কাজ করছে বলে জানা গেছে।

সুন্দরবনের একাধিক জেলে বাওয়ালী এ সকল তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পুষ্পকাটি টহল ফাঁড়ির দায়িত্বরত ফরেস্টার শাহাজান আলীর সহযোগিতায় সুন্দরবন এলাকায় অবৈধভাবে শত শত জেলেরা মাছ ও কাঁকড়া ধরা অব্যাহত রেখেছেন। মাসিক ও সাপ্তাহিক চুক্তিতে জেলেরা মাছ ও কাঁকড়া ধরায় এ সকল এলাকায় বনদস্যুদের আনাগোনা বেশি।

জেলে কালাচাঁদ গাজী ও ফকির গাজী জানান, ফাঁড়ি কর্মকর্তাকে সপ্তাহে মাছ ধরার জন্য নৌকা প্রতি ২ হাজার টাকা ও বনদস্যু ফজলু বাহিনীকে দেড় হাজার টাকা দিতে হয়। বিনিময়ে তারা নিষিদ্ধ পল্লী পুষ্পকাটিতে মাছ ধরার সুযোগ দিচ্ছে। শুধু ফজলু বাহিনী নয়, অন্যান্য বনদস্যু বাহিনীর সামনে পড়লে তাদেরও চাঁদা দিতে হয়।

এ সকল জেলে বাওয়ালীদের অভিযোগ, বনদস্যু ফজলু বাহিনীর প্রধান ফজলুসহ তার বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্যরা পুষ্পকাটি টহল ফাঁড়িতেই অবস্থান নিয়ে বহাল তবিয়াতে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন।

টহল ফাঁড়ির এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুষ্পকাটি বন টহল ফাঁড়িতে অস্ত্র ও লোকবল কম। এছাড়া মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে গভীর বনের ভিতরে পুষ্পকাটি টহল ফাঁড়ির অবস্থান হওয়ায় বন কর্মচারীরা নিরুপায়। ফলে বনদস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা করেই তাদের সেখানে টিকে থাকতে হচ্ছে।

জেলেরা জানায়, গভীর জঙ্গলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করার তাগিদে যে টাকা উপার্জন হয় তার অর্ধেক বন কর্মচারীদের ও বন দস্যুদের দিতে হয়। ফলে খরচ পুষিয়ে নিতে জেলেরা সপ্তাহ ও মাসের শেষে বাড়ি ফেরার সময় সুন্দরবনের মূল্যবান গাছ কেটে আনাসহ মায়াবী হরিণ শিকার করে লোকালয়ে আসছে। আর ওই কাঠ ও হরিণের মাংস বিক্রি করেই তারা সংসার চালাচ্ছেন।

এদিকে, এক শ্রেণির চোরাই শিকারী পুষ্পকাটি বন ফাঁড়ির সহযোগিতায় প্রতিনিয়ত হরিণ শিকার করছেন। এমনকি শিকারীরা বাঘ শিকার করতেও কুণ্ঠবোধ করছেন না।

এ ব্যাপারে পুষ্পকাটি বন টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা শাহাজান আলী তার বিরুদ্ধের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সামনে অনেক কিছু ঘটছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র আর জনবল না থাকায় বনদস্যুদের কিছুই করতে পারছি না। তবে তিনি বনদস্যুদের তৎপরতার কথা স্বীকার করেন।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।