দেনার দায়ে সন্তান বিক্রি করতে চান আল আমিন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ১১:৪৩ এএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

 

এনজিও ও স্থানীয়দের কাছ থেকে সুদে ধার নেয়া টাকা পরিশোধ করতে এখন সন্তান বিক্রির কথা ভাবছেন মো. আল আমিন নামে এক বাবা। ঘটনাটি ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভেদুরিয়া গ্রামের।

ওই গ্রামের মো. মজনু মিয়ার বড় ছেলে মো. আল আমিন ২০ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য নিজের দুই সন্তানের যেকোনো একজনকে বিক্রি করতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

স্থানীয়রা জানান, আল আমিন আগে জাহাজে কাজ করতেন। গত ৪ বছর আগে তিনি ভেদুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় একটি কীটনাশটের দোকান দেন। দোকানটি ভালোই চলছিল। এছাড়াও তিনি জমি বন্ধক রেখে ধান ও সবজির চাষ করছেন।

আল আমিন বলেন, হঠাৎ ২০১৭ সালের শেষ দিকে ধান ও সবজির খেতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লোকসান হয়। এছাড়াও ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের শুরুতে দোকানে অনেক বাকি দেয়ায় লোকসান হয়। পরে নিরুপায় হয়ে এনজিও থেকে দুই নামে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দোকানে মালামাল উঠাই ও জমিতে নতুন করে আবাদ শুরু করার জন্য স্থানীয় একজনের কাছ থেকে সুদে ২ লাখ টাকা ধার নিই। এভাবে তিন মাস পার হলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

পরে এনজিওর কিস্তির টাকা ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে কষ্ট হলে আবারও স্থানীয় আরেকজনের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা সুদে ধার নিই। এরইমধ্যে দোকানের মালামালে সাড়ে ৫ লাখ টাকা পাওনা হয়ে যায়। এভাবে পর্যায়ক্রমে এনজিও ও স্থানীয়দের কাছ থেকে সুদে ধার নেয়া টাকার পরিমাণ বেড়ে দাাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। এখন দোকানে মালামাল ও খেতে ফসলও নেই।

আমার সম্পদ বলতে ৪ শতাংশ জমির উপর একটি ঘর রয়েছে। তারও মালিক আমরা তিন ভাই ও চার বোন। তাই আমরা স্বামী-স্ত্রী বাধ্য হয়ে আমাদের দুই ছেলে সিয়াম (৫) ও সিহাবকে (২) বিক্রি করে দেনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আল আমিনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম বলেন, আমার স্বামীর এখন অনেক টাকা দেনা রয়েছে। প্রতিমাসে ৬০ হাজার টাকা এনজিওর কিস্তি ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে লাগবে। নিরুপায় হয়ে আমরা সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি জানি না। তবে ওই ব্যক্তি অফিসে এলে সহযোগিতা করা যেতে পারে।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।