স্বামীকে মেরে ফেললেন নববধূ
বিয়ের মাত্র ২০ দিনের মাথায় এক নববধূর বিরুদ্ধে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের গোমজানি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত স্বামী নুরনবী (২৫) ওই গ্রামের জুব্বার শিকদারের ছেলে। আর অভিযুক্ত নববধূ কল্পনা (২২) সদর উপজেলার কাতুলী গ্রামের ছোরহাবের মেয়ে।
নিহতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি- তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশের ধারণা নুরনবী আত্মহত্যা করেছেন।
এ বিষয়ে নিহতের মা লাইলি বেগম বলেন, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে কল্পনার সঙ্গে আমার ছেলে নুরনবীর বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর থেকেই স্বামী নুরনবীসহ পরিবারের কারও সঙ্গেই নববধূ কল্পনা খুব একটা কথা বলতো না। হত্যার রাতেই প্রতিবেশী জিয়ারতের দেয়া সংবাদে আমার ছেলে নুরনবীর ঘরে গিয়ে দেখি সে শুয়ে আছে আর পাশে দাঁড়িয়ে আছে কল্পনা, ঘরের মেঝেতে পরে আছে দড়ি। কল্পনা আমার ছেলে নুরনবীকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করার পর কেন আমার ছেলে আত্মহত্যা করবে? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
প্রত্যক্ষদর্শী জিয়ারত মিয়া বলেন, আমি রাতে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ নুরনবীর ঘরে কেউ ছটফট করছে এমন শব্দ শুনতে পাই। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় আমি তার ঘরের মেঝের নিচ দিয়ে উঁকি দেই। এ সময় দেখতে পাই নুরনবীকে স্ত্রী কল্পনা খাটের নিচ থেকে খাটে উঠাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক আমি নুরনবীর পরিবারসহ প্রতিবেশী দারোগ আলীকে ঘটনাটি জানাই। পরে নুরনবীর মা ঘরে ঢুকে ছেলের মরদেহ খাটে পরে থাকতে দেখেন। এছাড়াও নিহত নুরনবীর গলায় ফাঁস লাগানোর চিহ্ন দেখতে পান। এ কারণেই তাদের ধারণা, নুরনবীকে স্ত্রী কল্পনা হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, নুরনবীকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার স্ত্রী কল্পনা গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে।
তারা জানান, নুরনবী একজন খেটে খাওয়া মানুষ, তিনি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করার অল্প কয়েকদিনের মাথায় কেন তিনি আত্মহত্যা করবেন?
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল হক ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে শনিবার সকালে উদ্ধারকৃত মরদেহটি ময়নতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হবে। এছাড়াও থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/এমকেএইচ