ধর্ষক যে দলেরই হোক ছাড় দেয়া হবে না : ডিআইজি ফারুক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৯

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ভোট দেয়া নিয়ে বাক-বিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে গণধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে দেখতে গেলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম ফারুক।

এ সময় তিনি বলেন, ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা যত বড় শক্তিশালী কিংবা যে দলেরই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের আইনের আওতায় আনা আমাদের একমাত্র কাজ। অভিযুক্তদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

বুধবার রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সুবর্ণচরে গণধর্ষণের শিকার নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা শেষে এসব কথা বলেন ডিআইজি গোলাম ফারুক। পৃথক পৃথকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন এবং পুরো ঘটনার বিবরণ শোনেন তিনি।

ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, প্রাথমিকভাবে নয়জনকে আসামি করে মামলা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তারা যে দলের বা যত প্রভাবশালী হোক তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা পুলিশের দায়িত্ব।

এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাহীনতা ও হুমকির বিষয়টি জানানো হলে ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, নির্যাতিত নারীর গ্রামের বাড়ি পাহারা দেবে পুলিশ। শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পাওয়া এই সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে কেউ বাধাগ্রস্ত করলে প্রতিহত করা হবে।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন ডিআইজি গোলাম ফারুক। এর আগে সন্ধ্যায় ওই নারীর গ্রামের বাড়ি সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি পরিদর্শন করে এবং সেখানকার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন ডিআইজি।

এ সময় তার সঙ্গে অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল ফয়েজ, জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরিফসহ পুলিশের স্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর সকালে নির্যাতিত গৃহবধূ ভোট দিতে গেলে নৌকার কয়েকজন সমর্থক তাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বলে। তিনি তখন ধানের শীষে ভোট দেয়ার কথা বললে তাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় তারা তাকে ‘তোর কপালে শনি আছে’ বলে হুমকি দেয়। পরে কেন্দ্র থেকে দ্রুত বের হয়ে বাড়ি ফিরে যান গৃহবধূ।

এরপর রোববার রাত ১২টার দিকে একই এলাকার ১০-১২ জন তাদের বাড়িতে এসে প্রথমে বসতঘর ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পিটিয়ে আহত করে। পরে স্বামী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে (১২) বেঁধে রেখে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে তারা।

একপর্যায়ে তারা তাকে গলা কেটে হত্যার করতে উদ্যত হয়। এ সময় প্রাণ ভিক্ষা চাইলে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়ির উঠান সংলগ্ন পুকুর ঘাটে ফেলে চলে যায় তারা। এ ঘটনায় সোমবার রাত ৯টায় ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।

মিজানুর রহমান/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।