সংঘর্ষ-ভাঙচুর-আগুন-ককটেলে সিলেটে নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮
ছবি : মিঠু দাশ জয়

কয়েকটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ, বিএনপি প্রার্থীর বুথ ভাঙচুরসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যে দিয়ে সিলেটে ভোটগ্রহণ চলছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুই কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া জৈন্তাপুরের একটি কেন্দ্রের সামনেও ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় শাহজালাল জামেয়া কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, টোকেনবুথ ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রের বাইরে বিএনপি প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের ধানের শীষের টোকেনবুথ ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল ফাটিয়ে বুথের চেয়ার-টেবিল ভেঙে চলে যান। এর দেড় ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টা বিএনপি সমর্থকরা এসে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বুথে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। পরে বেশ কিছু সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বিজিবি, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Sylhet-Clash

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার শীল। এ সময় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে ওই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমে গেছে।

এছাড়া সিলেট নগরের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে অন্তত তিনটি কেন্দ্রে ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসাররা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে নগরের মদিনা মার্কেট ও ঘাসিটুলার মজুমদার পাড়া এলাকার বিএনপির কর্মী সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন তাদের বিএনপি সমর্থক অধ্যুষিত এলাকার ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তারা কেন্দ্রে যেতে পারছেন না।

Sylhet-Clash

তবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, কাউকে তারা বাধা দিচ্ছে না। মদিনা মার্কেট ও মজুমদার পাড়া এলাকায় তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে বিএনপি ও ছাত্রদল ঢিল ও ককটেল ছুড়লে তারা এর জবাব দিয়েছে। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের শামীমাবাদ এলাকায় মইনুদ্দিন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, মজুমদার পাড়া থেকে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে পারছেন না। একদল যুবক ভোটারদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ওই এলাকায় পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আলী ও আওয়ামী লীগ কর্মী জুয়েল আহমদ আহত হন। এর মধ্যে জুয়েলকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান আহত সুরুজ আলী। পরে খবর পেয়ে বিজিবি ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

Sylhet-Clash

মইনুদ্দিন মহিলা কলেজ কেন্দ্র নারী ও পুরুষ দুটি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোট কেন্দ্রের দুটি বুথে বিএনপি প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ছিলেন না। অপর তিনটি বুথে অবশ্য এজেন্ট ছিল।

এজন্ট না থাকা প্রসঙ্গে মইনুদ্দিন মহিলা কলেজের পুরুষ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রাজিব সী বলেন, দুটি বুথে বিএনপির কোনো এজেন্ট আসেননি। তবে অপর তিনটি বুথে তাদের এজেন্ট আছে। এখানে আমার কোনো কিছু করার নেই।

অন্যদিকে সিলেট-৪ আসনের জৈন্তাপুরের একটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্বাভাবিকভাবেই চলছে। সকাল ১০টার দিকে উপজেলার করের বাজারের পাঁচপাড়া মাদরাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

Sylhet-Clash

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে কে বা কারা এসে ককটেল বিস্ফোরণ করে পালিয়ে যায়। এ সময় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তবে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়নি।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে ওই কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হচ্ছে। বিজিবিসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা টহলে আছেন।

ছামির মাহমুদ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।