নাঙ্গলকোটে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, বাড়ি-দোকানে আগুন
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে পৃথক পৃথক স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, দোকানপাট, গাড়ি -বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকেলে ও সন্ধ্যায় দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শরীফুল ইসলাম কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ দাবি করেছে, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকারা ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল যুবলীগের কর্মী রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রামে গিয়ে রোববার ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা শরীফুল ইসলামসহ দুজন আহত হন। এর জের ধরে হেলমেট পরিহিত একদল দুর্বৃত্ত সন্ধ্যার দিকে বেতাগাঁও গ্রামের চুনা বেপারী বিএনপি শফিক ও জালালের বাড়ি ও দোকানে আগুন দেন। সেইসঙ্গে জালালের ভাতিজা শাহীনের ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মাওলানা ইব্রাহিমের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একই সময়ে রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের ইলেকশান বাজারে ওই গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি কর্মী হালিমের দোকান, জয়নালের হার্ডওয়ার দোকান, মঘুয়া গ্রামের শাকেরের দোকান ও জামায়াত নেতা শামছু উদ্দিনের মার্কেটে ভাঙচুর চালায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে সোমবার (২৪ ডিসেম্রব) বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর সমর্থনে তার মেয়ে ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগ করার কথা রয়েছে। ওই পথসভাকে উপলক্ষ করে যুক্তরাজ্য বিএনপির উপদেষ্টা সলিসিটর ইকরামুল হক মজুমদারসহ পেড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শ্রীফলিয়া বাজার বালুর মাঠে ধানের শীষের সমর্থনে উঠান বৈঠক ও পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগ কর্মীরা শ্রীফলিয়া বাজারে ইকরামুল হক মজুমদারের হাইএ´ গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ ছাড়া একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শ্রীফলিয়া বাজার কমিটির সেক্রেটারি ও বিএনপি কর্মী সেলিম ভূঁইয়ার ফার্মেসি দোকান ও জামায়াত নেতা মহিউদ্দিন শিপনের কনফেকশনারি দোকানে ভাঙচুর করে। এতে এক বিএনপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান সলিসিটর ইকরামুল হক মজুমদার।
রাতে মুঠো ফোনে বেতাগাঁও গ্রামের বিএনপি কর্মী জালাল আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের গ্রামে এসে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে আওয়ামী লীগের লোকজন এসে আমার ও আমার ভাতিজার ঘরে এবং দোকান আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এতে আমার দোকানের প্রায় চার লাখ টাকার মালামাল এবং ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
রাত ১০ টার দিকে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ফিরে এলে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য জানা যাবে।
মো. কামাল উদ্দিন/জেডএ