‘হেলিকপ্টার হুজুর’কে ফেলে উড়ে গেল হেলিকপ্টার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পাবনা
প্রকাশিত: ০৯:৩১ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

পাবনার চাটমোহরে হেলিকপ্টারে জলসা করতে এসে চুক্তি অনুযায়ী ওয়াজ না করায় আয়োজক ও মুসল্লিদের জনরোষের মুখে পড়েছেন প্রধান বক্তা মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিক (কুয়াকাটা)।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরের বালুচর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাকে ছাড়াই হেলিকপ্টারটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

জলসা কমিটি ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ছোট গুড়াখাড়া-চিরইল-সাড়োরা-ইচাখালী সম্মিলিত হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় ইসলামী জলসার দিন ছিল বৃহস্পতিবার।

জলসার প্রধান বক্তা মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে (কুয়াকাটা) প্রায় এক বছর আগে ৫০ হাজার টাকা বায়না করা হয়। চুক্তি ছিল জলসার দিন বাদ জোহর থেকে বাদ আসর পর্যন্ত ওয়াজ করবেন তিনি। সেই সঙ্গে হেলিকপ্টারে আসার জন্য ভাড়া বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে।

চুক্তি অনুযায়ী, জলসা কমিটি হেলিকপ্টারের ভাড়া পরিশোধ করে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টারে পৌর শহরের বালুচর মাঠে নামেন প্রধান বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক।

Jalsa-Photo

এরপর আড়াইটায় জলসাস্থলে গিয়ে ওয়াজ শুরু করেন। প্রায় ৪০ মিনিট ওয়াজ করে মোনাজাত শেষে তড়িঘড়ি করে বালুচর মাঠে এসে হেলিকপ্টারে চড়ার সময় জলসা কমিটি ও মুসল্লিরা বাধা দিলে সেখানে উত্তেজনা শুরু হয়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে তাকে তুলে দেয় থানা পুলিশ।

জলসা কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি বছর চার গ্রামের মানুষ মিলে বড় জলসার আয়োজন করি। চুক্তি অনুযায়ী, তিনি (হাফিজুর রহমান সিদ্দিক) ওয়াজ না করে দ্রুত সময়ে চলে যাওয়ার সময় স্থানীয় মুসল্লিরা বাধা দেন এবং ক্ষিপ্ত হন। তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। কোনো বছরই কোনো বক্তা এমন করেননি। তিনি আমাদের অনেক ক্ষতি করেছেন।

এ ব্যাপারে প্রধান বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার একান্ত সহকারী রফিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে চাটমোহর থানা পুলিশের ওসি সেখ মো. নাসীর উদ্দিন বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে জনরোষের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে উদ্ধার করে চাটমোহর রেলস্টেশন থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে টিকিট কেটে তুলে দেয়া হয়েছে। তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

একে জামান/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।