ঐতিহ্য ধরে রেখেছে খন্ডলের মিষ্টি
ঐতিহ্য ধরে রেখেছে পরশুরামের খন্ডলের মিষ্টি। দূর-দুরান্ত থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য আবার কখনো কখনো গরম মিষ্টি খাওয়ার জন্য এখানে ছুটে আসে মানুষ। দিন দিন এ মিষ্টির কদর বাড়ায় এখানকার দোকানিরা বেজায় খুশি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সত্তরের দশকে কুমিল্লার যোগল চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তি মিষ্টি তৈরি শুরু করেন। ১৯৭০ সালে পরশুরাম উপজেলার বক্স মাহমুদ ইউনিয়নের খন্ডল হাইস্কুলের পার্শ্বে একটি ছোট্ট দোকান দেন যোগল। অল্প দিনের মধ্যে তার তৈরি দৃষ্টিনন্দন ও সু-স্বাদু মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
যোগলের সাগরেদ স্থানীয় এক দোকানি জানায়, তিনি ৬২ রকমের মিষ্টি তৈরি করতে পারতেন। ওই দোকানি আরো জানায়, যোগলের মিষ্টি তৈরির দৃশ্য দেখার জন্য তখন অনেক মানুষের সমাগম হতো।
বয়সের ভারে খেই হারিয়েছেন যোগল। তিনি এখন আর মিষ্টি তৈরি করেন না। তবে যোগলের দোকানে থাকা তারই শীর্ষদের বেশ কয়েকজন এখন এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। দোলোয়ার হোসেন, বেলাল পাটোয়ারী, জিয়া উদ্দিন ও হাফেজ মাষ্টার খন্ডলে এ মিষ্টি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছেন।
মিষ্টি কারিগর দোলোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যোগল চন্দ্র দাসের কাছ থেকে তিনি মিষ্টি তৈরির তালিম নিয়েছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দূর-দূরান্ত থেকে মিষ্টি খেতে লোকজন এখানে আসে।
প্রায় একই কথা বলেন আরেক মিষ্টি কারিগর হাফেজ মাষ্টার। তিনি জাগো নিউজকে জানান, দৈনিক তিনি ১শ থেকে দেড় শ কেজি মিষ্টি তৈরি করেন। প্রতিদিন বিকালে মিষ্টি কিনতে বহু লোকের সমাগম ঘটে।
যেভাবে তৈরি হয় খন্ডলের মিষ্টি:
খন্ডলের মিষ্টি তৈরিতে গরুর খাটি দুধ, সামান্য ময়দা ও চিনি ব্যবহার করা হয়। খন্ডলের আবদুল কাদের নামের আরেক মিষ্টি কারিগর জানান, খন্ডলের মিষ্টির সঙ্গে অন্য কোনো উপাদান মেশানো হয় না। দুধের সঙ্গে সামান্য ময়দা ব্যবহার করা হয় ছানাকে গাঢ় করার জন্য। এরপর মন্ড বানিয়ে মিষ্টি তৈরি করা হয়। এক কেজি মিষ্টি তৈরি করতে ১২০ টাকার মত খরচ হয় বলে তিনি জানান।
এসএস/পিআর