চিকিৎসককে পেটালেন যুবলীগ নেতা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধর করেছেন এক যুবলীগ নেতা। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত সুমনুজ্জামান সুমন (২৮) নগরীর বেলপুকুর থানার পশ্চিম জামিরা এলাকার বাসিন্দা। তিনি পুঠিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার পর তাকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রায় আধাঘণ্টা চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন চিকিৎসকরা। পরে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার শাস্তির আশ্বাসে কাজে ফিরে যান চিকিৎসকরা।
অভিযুক্ত সুমন পুঠিয়ার বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বদির ছেলে। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী তারা।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বাবা-ছেলে মিলে বিরোধী পক্ষের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। তাদের হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে সুমন ও তার অনুসারী মনিরুল ইসলাম (৩০) রাতে চিকিৎসা নিতে রামেক হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন যুবলীগ নেতা।
হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ সহকারী উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, সুমন হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। তার অনুসারী মনিরুল ছিলেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি। দুইজনের কেউ গুরুতর আহত হননি।
তিনি আরও বলেন, সকাল ১০টার দিকে সুমন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে যান। সেখানে মনিরুলের চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার আহসানুজ্জামান টিংকুর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
একপর্যায়ে ওই চিকিৎসককে মারধর করেন সুমন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে হাসপাতাল পরিচালকের দফতরে নিয়ে যায়। এখনো সেখানে তাকে আটক রাখা হয়েছে। পরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই চিকিৎসক। এ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে কয়েক দফায় যোগাযোগ করেও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমানের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
নগরীর বেলপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন না- এমন খবর সোমবার দুপুরে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
এতে উল্লাস প্রকাশ করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তুহিন উজ্জামান ও তার অনুসারীরা। এরই জেরে সন্ধ্যায় বেলপুকুর রেলগেট এলাকায় তাদের ওপর হামলা চালায় দারার অনুসারীরা।
হামলায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ও তার ছেলে সুমন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন। এ সময় দলীয় কার্যালয়সহ দুটি দোকান ও দুটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখনো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ নিয়ে থানায় এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি বলে জানান ওসি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/এমএস