মন্ত্রীকে টেক্কা দিতে চান তারা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর
প্রকাশিত: ০৬:৪২ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়তে প্রবীণ নেতার সঙ্গে নবীনরা লড়াই করছেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সংসদ সদস্য ছিলেন। এবার তার সঙ্গে মনোনয়ন পেতে প্রার্থী হয়েছেন ১৫ নবীন প্রার্থী। মন্ত্রীকে টেক্কা দিতে চান তারা সবাই।

এর মধ্যে জোরালোভাবে টেক্কা দিচ্ছেন ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তার। তিনি নির্বাচনের মাঠে নতুন মুখ। তবে তিনি শক্ত প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা সাত্তারের হয়ে কাজ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এ আসনে দলের অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, সজিব গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম, জেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলব, কেন্দ্রীয় যুবলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শোয়েব আহমেদ ফারুক, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য বদরুল আলম শ্যামল, যুবলীগ নেতা হাসিবুর রহমান বাচ্চু, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিয়া সৃজনী শিউলী ও আওয়ামী লীগ নেতা খোকন চন্দ্র পাল।

এদের মধ্যে গোলাম ফারুক পিংকুসহ কয়েকজন প্রার্থী প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোটাদের কাছে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

মান্দারী ও দত্তপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুইজন সিনিয়র নেতা জানান, এম এ সাত্তার এলাকায় দান-অনুদান ও সাহায্য-সহযোগিতা করে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের আস্থা অর্জন করছেন। এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে ২০০৮ সালে সদর উপজেলার বটতলীতে অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এর পক্ষ থেকে প্রতি বছর রমজান মাসে ১০-১৫টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। দুস্থ, প্রতিবন্ধী ও অক্ষম প্রায় ৫ শতাধিক নারী পুরুষকে মাসিক ৩ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। নির্বাচনী এলাকার স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। সাত্তারের এসব মানবিক কর্মকাণ্ডে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ আসনের পূর্বাঞ্চলে বিএনপির সরকারের আমলে গড়ে ওঠা ছোট-বড় ২২টি সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে রাজত্ব করছে। রাজনৈতিক মদদে এসব বাহিনী প্রতিযোগিতা দিয়ে হত্যা, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অপহরণ ও লুটপাটসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের হাতে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র মজুত ছিল। সন্ত্রাসীদের কাছে লক্ষাধিক মানুষ জিম্মি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ও পুলিশ-র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় ইতোমধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অবশ্য এর জন্য শাহজাহান কামাল এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর আন্তরিকতা ছিল।

আওয়ামী লীগ নেতা এম এ সাত্তার বলেন, আমি মানুষের জন্য কাজ করছি। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভিশন পর্যায়ক্রমে সকল শ্রেণিপেশার জনগণের মধ্যে তুলে ধরেছি। রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। বাংলাদেশ দিন দিন বিশ্বের কাছে উন্নয়নে উদাহরণ হচ্ছে। মানবিক সমাজ গঠন করে একটি সমৃদ্ধ জেলা প্রতিষ্ঠা করাই আমার স্বপ্ন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ কে এম শাহজাহান কামাল বলেন, আমি এলাকায় বেশ উন্নয়ন করেছি। আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে মডেল হিসেবে তুলে ধরছেন। বাংলাদেশে গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, স্বাধীনতার পর আর হয়নি। দল আমার ত্যাগ-শ্রম মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে বলে বিশ্বাস করি।

কাজল কায়েস/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।