খুনিকে দেয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০৬:১৬ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০১৮

কুমিল্লার তিতাসের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মনির হোসেন হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল একই গ্রামের মমতাজ হোসেন হত্যাকাণ্ড এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা।

বিগত প্রায় ১৫ বছর আগে তিতাসের মমতাজ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতেই তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম ও অন্যান্য আসামি ৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে ঘাতক ভাড়ায় এনে খুন করেন হাজী মনিরকে।

মামলার প্রধান আসামি ও ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গ্রেফতারের পরই সে আদালতে এমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

শুক্রবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জালাল উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনা, ঘাতক ভাড়া আনা, হত্যার কারণ ও জড়িত অপর আসামিদের নাম জানায় ঘাতক জাহাঙ্গীর।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম পিপিএম। ঘাতক জাহাঙ্গীর আলম তিতাসের ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে।

মামলার অভিযোগ ও ডিবি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিতাসের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মনির হোসেনকে বাড়ির অদূরে ভাটিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় সন্ত্রাসীরা প্রথমে গুলি এবং পরে কুপিয়ে হত্যা করে। পরদিন রাতে নিহতের ছেলে আইনজীবী মো. মুক্তার হোসেন নাঈম বাদী হয়ে তিতাস থানায় মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় জগতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কাজী আশেক, নবীর হোসেনসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়।

২৬ মার্চ পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম পিপিএম জানান, বিগত প্রায় ১৫ বছর আগে তিতাসের ভাটিপাড়া গ্রামের মমতাজ খুন হন। ওই খুনের নেপথ্যে হাজী মনিরের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেছে ঘাতক জাহাঙ্গীর। এছাড়াও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাজী মনিরের সঙ্গে এলাকার লোকজনের বিরোধ চলছিল। তাই ঘাতক জাহাঙ্গীর তার ভাই মমতাজ হত্যার প্রতিশোধ নিতে ও এলাকায় হাজী মনিরের আধিপত্য শেষ করতে তার সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে। পরে এসব টাকা হত্যার মিশনে অংশ নেয়া ঘাতকদের দেয়া হয়। হত্যার আগে ঘাতকরা একাধিকবার গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। হত্যার সময় ঘাতকরা ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় কয়েকটি স্থানে অবস্থান নেয়। কয়েক মিনিটেই কিলিং মিশন শেষ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে নিরাপদেই ঘাতকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, আদালতে ঘাতক জাহাঙ্গীরের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে হত্যার মিশনে অংশ নেয়া, হত্যার জন্য চাঁদা দাতাসহ অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই এবং অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ইতোপূর্বে এ মামলায় মমতাজ হোসেনের স্ত্রী বিলকিস বেগমসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

কামাল উদ্দিন/এমএএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।