২০ হাজার হজযাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত
রেজিস্ট্রেশন জটিলতায় এবার হজে যেতে পারছেন না সারাদেশের ২০ হাজার হজযাত্রী। অপরিকল্পিত রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির কারণে এই জটিলতা তৈরি হয়েছে।
রোববার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম হজযাত্রী কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুজিবুল হক শুক্কুর বলেন, ‘এবার সরকারিভাবে ১০ হাজার ও বেসরকারিভাবে ৯১ হাজার ৭শ’ ৫৮ জন হজযাত্রী হজ পালনের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
যেখানে হজ এজেন্ট সমূহকে মোয়াল্লেম ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে ঐ সিদ্ধান্ত বাতিল করে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডাটা এন্টি কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন।’
১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এই নির্দেশনা পাওয়ার পর ২০ ফেব্রুয়ারি ছিল শুক্রবার এবং পরের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।
অথচ ২২ ফেব্রুয়ারি এজেন্সি মালিকরা অফিসে এসে জানতে পারে বেসরকারি কোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৯১ হাজার ৭শ’ ৫৮টি কোটার সবই পূরণ হয়ে গেছে। ফলে সারাদেশের ৩৫০টি এজেন্টের অধীনে নিবন্ধিত ২০ হাজার হজযাত্রী রেজিস্ট্রেশন থেকে বঞ্চিত হয়। অথচ মোয়াল্লেমদের ড্রাফট জমা দেওয়ার শেষ সময়সীমা ছিল ১ মার্চ।
সমিতির নেতারা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ‘এ রেজিস্ট্রেশন সংকট কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিছু কিছু এজেন্সি ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত হজযাত্রী রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে।
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৫ হাজার ভুয়া হজযাত্রীর সন্ধান পেয়েছে। অথচ তদন্ত কমিটির প্রধান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব হাসান জাহাঙ্গীর তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর না করায় তদন্ত প্রতিবেদনটি আলোর মুখ দেখছেনা।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করা হয়, ‘রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধরিত তারিখে অফিস বন্ধ থাকার সুযোগে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বাবুল হাসান চৌধুরী, যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর ও কিছু অসাধু এজেন্সি মালিকের জোগসাজশে ভুয়া ডাটা এন্ট্রি হয়েছে।’
সংকট সমাধানে হজযাত্রী কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। দাবি গুলো হল- ৫ বছরের মধ্যে দুইবার হজে যাচ্ছেন এমন হজযাত্রী এবং যে সকল হজযাত্রীদের বয়স ৪০ বছরের নিচে তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা। এজেন্সিগুলোর ১০ শতাংশ কোটা বাতিল করা।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হজযাত্রী কল্যাণ সংস্থার মহাসচিব হাফেজ মুহাম্মদ আমীন, সচিব মাওলানা কাজী জসিম উদ্দিন, উপ-সচিব শাহজাদা সামশুদ্দিন, হাব সদস্য আবদুল করিম প্রমুখ।
জীবন মুছা/এসএইচএস/আরআইপি