কবিরাজ মাসুদের কাছে কেন আসছেন ডায়াবেটিস-প্যারালাইসিস রোগীরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১০:৩৮ এএম, ২১ অক্টোবর ২০১৮

টাঙ্গাইলের কবিরাজ মাসুদ মিয়ার গাছ-গাছরার তৈরি ওষুধে ডায়াবেটিস রোগ স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও তার তৈরি ওষুধ খেয়ে প্যারালাইসিস আক্রান্ত রোগীও ভালো হচ্ছেন। ফলে ডায়াবেটিস ও প্যারালাইসিস রোগীদের এই ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। উপকারভোগী রোগীদের প্রচারণায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগীরা ভিড় করছেন টাঙ্গাইলের কাগমারী কলেজ মোড়স্থ মাসুদ মিয়ার বাড়িতে।

কবিরাজ মাসুদ মিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে গাইবান্ধা সদর উপজেলার মিয়া পাড়ার মৃত আব্দুল বাছেদ মিয়ার ছেলে আব্দুল খালেক জানান, গত ৪ বছর আগে তিনি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হন। তার ডায়াবেটিস ১৭/১৮ পয়েন্টে থাকতো। নিয়মিত ইনসুলিন ব্যবহার করতে হতো। এরই মধ্যে ব্রেইন স্ট্রোক হয় তার। এতে তার শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে টাঙ্গাইলের মাসুদ মিয়ার গাছ গাছরার তৈরি ওষুধ মালিশ করে অবশ হওয়া শরীরের আরোগ্য লাভ করেন। এছাড়াও তার গাছ-গাছরার তৈরি ওষুধ খেয়ে ডায়াবেটিস স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। বর্তমানে তিনি পুরোপুরি সুস্থ্য জীবন-যাপন করছেন বলে জানান।

টাঙ্গাইল পৌর এলাকার সন্তোষ গ্রামের মৃত আবু বক্কর মিয়ার ছেলে মো. আশরাফ মিয়া জানান, গত দুই বছর যাবৎ প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়েছিলেন তিনি। তার শরীরের ডান পাশ হাত থেকে পা পর্যন্ত অবশ হয়ে পড়েছিল। অনেক চিকিৎসা করেও কোনো ফল হয়নি। পরে মাসুদ মিয়ার গাছ-গাছরার তৈরি ওষুধ মালিশ করে তিনি আজ সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারছেন।

এছাড়াও কবিরাজ মাসুদের ২১ দিনের ওষুধ খেয়ে বর্তমানে ভালো আছেন সৈয়দপুর সুনামগঞ্জের কাজীবাড়ি গ্রামের সৈয়দ হুসবানুর রহমান, একই উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ আলী, ৮৪ দিনের ওষুধ খেয়ে বর্তমানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বজিতের, ঢাকার মিরপুরের মো. মনির হোসেনের ও ভোলার চরফ্যাশনের মো. মাসুদ রানার। ৬৩ দিন ধরে ওষুধ সেবন করে ভালো আছেন ঢাকার আবুল হোসেন এবং ১২৬ দিনের ওষুধ খেয়ে ভালো আছেন ঢাকার মেরুল বাড্ডার মো. কবির হোসেন খান।

এ প্রসঙ্গে কবিরাজ মাসুদ মিয়া জানান, ২০০৬ সাল থেকে এ চিকিৎসা সেবা শুরু করেছেন তিনি। গাছ খাদ্য,পুষ্টি ও ওষুধের ব্যক্তিগত জ্ঞান থেকেই তার এই চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হচ্ছে। তিনি গাছের মূল, ছাল, লতা, পাতা, ফুল আর মধু দিয়ে তৈরি করছেন এ সকল ওষুধ। বিভিন্ন প্রকার ঔষুধি গাছ-গাছরা দিয়ে তৈরি করা বড়ি, ফাঁকি ওষুধ ও শরবত আকারে ২১ দিনের কোর্স করে একটি ফাইল দেয়া হয়। ডায়াবেটিসের এ ওষুধ তৈরি বাবদ ২১ দিনের প্রথম ফাইলের মূল্য ৩৭০০ টাকা, ২১ দিনের দ্বিতীয় ফাইল ২২০০ টাকা, ২১ দিনের তৃতীয় ফাইল ১৭০০ টাকা, ২১ দিনের চতুর্থ ফাইল ১২০০ টাকা এবং ২১ দিনের পঞ্চম ফাইলের মূল্য ১২০০ টাকা। এভাবে পরপর ৫ ফাইল ওষুধ সেবন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আর এই নিয়ন্ত্রণ চিরজীবন ধরে রাখতে শুধু পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এতেই স্থায়ীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তিনি বলেন, ঔষুধি গাছ-গাছরা চাহিদা অনুযায়ী সংগ্রহ করতে না পারায় রোগীদের কাঙিক্ষত চিকিৎসা সেবা দিতে পারছি না। তবে চিকিৎসায় ব্যবহৃত এ সকল ঔষুধি গাছ-গাছরার চাষ করতে পারলে সকল ডায়াবেটিস রোগীদের অল্প খরচে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হত। বর্তমানে আমার গাছ-গাছরার তৈরি মালিশ দ্বারা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত অনেক রোগী ভালো হচ্ছেন।

এছাড়াও বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা, হাড় জোড়া, শরীরে পানি আসা, জন্ডিস, পাইলস্, নতুন ও পুরাতন আমাশয়সহ কয়েকটি রোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে করছেন বলেও জানান কবিরাজ মাসুদ মিয়া।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।