মা-বাবা-মেয়েকে নির্মম নির্যাতন, এগিয়ে আসেনি কেউ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান
প্রকাশিত: ০৭:৩৫ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৮

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাড়াটিয়া অস্ত্রধারী এনে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে জখমসহ ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে নির্মম নির্যাতনের ঘটনাটি সবাই দেখলেও তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি কেউ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফাইতং ফাদুর ছড়া গ্রামে মৃত তফুর আলীর ছেলে আবদুল করিমের সঙ্গে একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. ফারুকের মধ্যে দীর্ঘ সাত বছর ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস বৈঠক হয়। সালিসের রায় আবদুল করিমের পক্ষে যায়। কিন্তু সালিসের রায় না মেনে ফারুক বান্দরবান জেলা জজ আদালতে মামলা দিয়ে করিমের পরিবারকে হয়রানি করে আসছিল।

এতেও ক্ষান্ত হয়নি ফারুক। সবশেষ মঙ্গলবার দুপুরে চকরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্রধারী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আবদুল করিমের জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে ফারুক।

একপর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ফারুক ও তার ভাই সাইফুল, বারেকসহ ভাড়াটিয়া শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আবদুল করিমের বাড়িয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। সেই সঙ্গে আবদুল করিম, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন এবং মাদরাসা পড়ুয়া মেয়ে জোহাইরা বেগমকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করে ফারুক ও তার সহযোগীরা।

এ সময় ফারুক ও তার সহযোগীরা করিমের বাড়িতে রক্ষিত স্থানীয় ফাইতং বায়তুল মামুর মসজিদের ১ লাখ টাকাসহ বাড়ির নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং মালামালসহ মোট ৫ লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

ফাদুরছড়া এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার থোয়াই হ্লা মার্মা বলেন, এই ধরনের নির্যাতন মানুষ করতে পারে না। ফারুক ও তার সঙ্গীরা অমানুষ। এলাকার লোকজন এগিয়ে না গেলে তারা করিমের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলত। তার মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি মর্মান্তিক।

লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন বলেন, হামলাকারীরা মাদরাসাছাত্রী জোহাইরা বেগমকে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে প্রকাশ্যে বেঁধে নির্যাতনের একপর্যায়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। নির্মম এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় লোকজন ফাইতং পুলিশ ফাঁড়িকে খবর দিলে তাদের উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ফারুক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাদশাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় অন্যান্য হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

লামা থানা পুলিশের ওসি অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি মর্মান্তিক। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।