রূপার সঙ্গে রাত কাটিয়ে আসমাকে বিয়ে করলেন শিক্ষক
বরিশালের মুলাদী উপজেলায় বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন এক প্রেমিকা। তবে স্কুলশিক্ষক ইউনুছ বিষয়টি আমলে না নিয়ে প্রেমিকাকে বাড়িতে রেখেই মঙ্গলবার দুপুরে পাশের চরমালিয়া গ্রামের কালু মুন্সির মেয়ে আসমাকে বিয়ে করেছেন।
মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ইউনুছ আলী বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত মোসলেম বেপারীর ছেলে ও গাছুয়া আ. কাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রেমিকা রূপা একই এলাকার মোশারেফ সিকদারের মেয়ে। রূপা সম্পর্কে ইউনুছ আলীর খালাতো বোন।
স্থানীয়রা জানান, ইউনুছের বিয়ের পরও তার বাড়িতে অবস্থান করছেন রূপা। ইউনুছের স্বজনরা অনেক চেষ্টা করেও রাত ৭টা পর্যন্ত তাকে বাড়ি থেকে সরাতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউনুছ আলী প্রায়ই রূপাদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। বিয়ের প্রলোভনে প্রায় দেড় বছর ধরে তারা দুইজন স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করে আসছেন।
গত কয়েকদিন ধরে ইউনুছ আলী প্রেমিকা রূপার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে বিয়ের জন্য অন্যত্র পাত্রী খুঁজতে শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চরমালিয়া গ্রামের আবুল কালাম ওরফে কালু মুন্সির মেয়ে আসমাকে বিয়ে করেন।
বিয়ের খবর জানতে পেরে সোমবার রাতেই বিয়ের দাবিতে ইউনুছের বাড়িতে অবস্থান নেন রূপা। তবে শিক্ষক ইউনুছ বিষয়টি আমলে না নিয়ে রূপাকে বাড়িতে রেখে মঙ্গলবার দুপুরে কালু মুন্সির মেয়ে আসমাকে বিয়ে করেন।
প্রেমিকা রূপা বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে খালাতো ভাই ইউনুছ আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রেমের সূত্র ধরে ইউনুছ আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করতে থাকে এবং একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। আমার সঙ্গে অনেক রাত কাটিয়েছে ইউনুছ।
সপ্তাহ খানেক আগে ইউনুছ আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার রাতে বিয়ের দাবিতে ইউনুছের বাড়িতে অবস্থান নিই। ইউনুছের সঙ্গে বিয়ে না হলে আমি আত্মহত্যা করব।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ইউনুছ রূপার সঙ্গে প্রেম ও দৈহিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পরিবারের সদস্যরা মেনে না নেয়ায় রূপাকে বিয়ে না করে অন্যত্র বিয়ে করেছি। এখানে আমার কিছুই করার নেই।
এ বিষয়ে রূপার বাবা মোশারফ হোসেন সিকদার বলেন, শিক্ষক ইউনুছ আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মুলাদী থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে মামলা দেয়া হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ইউনুছের মামা সফিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন উঠেপড়ে লেগেছেন এবং বিভিন্ন মহলে ধরনা দিচ্ছেন। সংবাদকর্মী ও প্রশাসনকে ম্যানেজের দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি।
সাইফ আমীন/এএম/পিআর