সহকর্মীকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে নিজেই ছুটলেন বিজিবির সিও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সহকর্মীর জীবন বাঁচাতে নিজেই ড্রাইভারের আসনে বসলেন ৪৬ বিজিবি’র অধিনায়ক লে.কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিজিবি ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

এ ঘটনার প্রতক্ষদর্শী শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার জয়নাল আবেদীন টিটু জানান, গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে যখন অফিস প্রায় শেষের দিকে তখন হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করে। তা দেখে আমি এগিয়ে গেলাম। রোগীর বয়স প্রায় ৫৫ বছর। রোগীকে দেখেই পরীক্ষা করা শুরু করলাম। দেখলাম তার Glasgow Coma Scale-এর মাত্রা নেমে ছয় এ ৷ গলবিলে (Oropharynx) ফেনা জমেছে। তার হাত পা মোচড়ানো শুরু হয়ে গেছে। পিউপিলদ্বয় সংকুচিত হয়ে আছে। রোগীর সঙ্গে থাকা এক তরুণের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলাম।

ঠিক তখনই বিজিবির একটি পাজেরো গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করলেন ৪৬ বিজিবি'র কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। গাড়ি থেকে নেমে আমার দিকে এগিয়ে এলেন তিনি। উনার চেহারা দেখেই বুঝতে পারলাম কিছু জানতে চাচ্ছেন তিনি। কোনো প্রশ্নের অপেক্ষা না করেই আমি বললাম, খুব সম্ভবত রোগী ব্রেইন স্ট্রোক করেছে। দ্রুত থাকে সিলেট পাঠাতে হবে এবং আমি রেফার্ড করে দিয়েছি।

এ সময় লে. কর্নেল সাহেব তার সহকর্মী সৈনিকদের জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোথায়? জবাব এলো, তিনি এখনও আসেননি, পোশাক পড়ছেন। এরপর তিনি কোনো কথা না বলেই ড্রাইভিং সিটে বসে অ্যাম্বুলেন্স স্টার্ট দিয়ে ড্রাইভারের রুমের কাছে কাছে নিয়ে গেলেন ৷

এ বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হলে লে.কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানান, ডাক্তার যখন জানালেন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ তখন বুঝতে পারছিলাম প্রতিটা মিনিট এই রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য খুব দামি। তাই আমাদের ড্রাইভার ড্রেসাপ করতে যে সময় লাগবে তা আমি নষ্ট করতে চাইনি।

রিপন দে/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।