পটিয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ফাঁকা গুলি
এক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের জের ধরে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার চক্রশালা রেল স্টেশন এলাকায় দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে নিলেও এখনো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দিনভর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের উত্তর খরনা ওয়াহিদুরপাড়া ও মল্লপাড়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনের চক্রশালা রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে ওয়াহিদুরপাড়া ও পূর্বপার্শ্বে মল্লপাড়া গ্রামের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, হকিস্টিক, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয়। এসম দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এ ঘটনায় কমলমুন্সিরহাটে প্রায় শতাধিক দোকানপাট দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল। উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে। উভয়পক্ষের লোকজন ছয় রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। তবে এতে কেউ গুলিবিদ্ধ কিংবা হতাহত হয়নি।
খবর পেয়ে দুপুরের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে উভয়পক্ষকে ধাওয়া করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় পুলিশ তিনটি কিরিচ, ৮টি হকিস্টিকসহ বিপুল পরিমাণ লাঠিসোটা উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার দুপুরে খরনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মাঈমুন চৌধুরী সিএনজি অটোরিকশাযোগে পটিয়া পৌর সদরে যাওয়ার পথে কমলমুন্সিরহাট এলাকায় শফি ও মোনাফ নামের দুই যুবক তাকে আক্রমণ করে। এই ঘটনার জেরে রোববার দুপুরে পারিগ্রাম এলাকার লোকজন চক্রশালা রেল স্টেশন এলাকায় ছাত্রলীগকর্মী ফারুককে মারধর করে। এ দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওয়াহিদুরপাড়া গ্রামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়।
বিষয়টি পার্শ্ববর্তী কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান এস এম ইনজামুল হক জসিম অবগত হওয়ার পর দুইপক্ষের মধ্যে একটি সালিশ-মীমাংসার চেষ্টা চালায়। সোমবার সকাল ১১টায় চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম চক্রশালা রেল স্টেশন এলাকায় উভয়পক্ষের পাঁচজন করে বিরোধ মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠকের আলোচনা করতে থাকে। এ সময় মল্লপাড়া গ্রামের লোকজন চক্রশালা রেল স্টেশনের কাছে এসে গুলিবর্ষণে ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে ওয়াহিদুরপাড়া গ্রামের কয়েকশ লোক ও মল্লপাড়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
পটিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে এক প্লাটুন দাঙ্গা পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ধরে রাখার জন্য উভয় এলাকার চেয়ারম্যানদের মধ্যস্থতায় মঙ্গলবার সকাল ১১টায় থানায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে পরিস্থিত স্বাভাবিক রয়েছে।
আবু আজাদ/বিএ