বাবলীদের করুণ দশা দেখে ঘর করে দিতে চাইলেন ইউএনও

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

‘দিন দিন ফুলে যাচ্ছে বাবলীর পা’ শিরোনামে জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদ দেখে চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে বাবলীদের বাড়িতে ছুটে গেলেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হক।

সোমবার সকালে তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইয়াহিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে যান তিনি। এ সময় তিনি তাদের বাড়ির করুণ অবস্থা দেখে একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বাবলীর মাকে জানিয়েছেন আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঘরের কাজ শুরু হবে এবং বাবলীর চিকিৎসার ব্যাপারে প্রশাসনের যতটুকু সাহায্য করার তার শতভাগ তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে করবেন।

ইউএনও মাহমুদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবেদনটি পড়েই আমি খোঁজ নিয়েছি। এজন্যই আজ সকালে ডাক্তারসহ তাদের বাড়িতে গেলাম। এর আগেও আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিচিত সব জায়াগায় খবর নিয়েছি কীভাবে বাবলীর চিকিৎসা করা যায়। আমরা দেখে যা বুঝলাম তাতে মনে হচ্ছে তার রোগটা খুব জটিল আকার ধারণ করেছে। ঢাকায় নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এবং সরকারি উপায়ে যতটা সম্ভব খোঁজ নিচ্ছে কোথায় তার চিকিৎসা ভালো হবে। আশা করছি খুব দ্রুত তা হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখলাম তারা এক ঘরে খুব কষ্ট করে ৫-৭ থাকছেন। তাই তাদেরকে ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঘরের কাজ শুরু হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইয়াইয়া জাগো নিউজকে বলেন, তার বাড়িতে গিয়ে যে মেডিকেল রিপোর্ট দেখেছি তাতে নিশ্চিত হয়েছি রোগটির নাম হেমাঞ্জিওমা (রক্তনালির টিউমার)। এ রোগের চিকিৎসা ঢাকা মেডিকেল কলেজে হবে।

Babli-(2)

গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাগো নিউজে বাবলীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তার দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। অনেকেই দেশ-বিদেশ থেকে বাবলীর মা খাতুন বেগমকে ফোন দিয়ে খবর নিয়েছেন, পাশে থাকার ইচ্ছে পোষণ করেছেন। এর মধ্যে মাওলানা ছালেহ হামীদি নামে একজন তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।

এরই প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার গরিব অ্যান্ড এতিম ট্রাস্টের প্রতিনিধি তুহিন চৌধুরী ও মাওলানা শাফি উদ্দিন বাবলীর বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করে বাবলীর চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আপাতত চিকিৎসার জন্য ২ লাখ টাকা দেন এবং প্রয়োজনে আরও টাকা পরে দেবেন। তিনি তার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে যে টাকা বাবলীর চিকিৎসার জন্য দিয়েছেন সেই টাকায় যেন চিকিৎসা হয় তার ব্যবস্থা করতে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে তুহিন চৌধুরীকে চিকিৎসার ব্যবস্থা দায়িত্ব দিয়েছেন।

মাওলানা ছালেহ হামীদির বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুনা গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন।

বাবলী আক্তার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছতিয়া গ্রামের সরফ মিয়ার মেয়ে।

বাবলীর মা খাতুন বেগম জাগো নিউজকে জানান, প্রতিদিন অনেকেই ফোন দিচ্ছেন আজ ইউএনও সাহেব এসেছিলেন। ঘর বানিয়ে দেবেন বলেছেন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। এতদিন কেউ খবর নেয়নি। আপনি সংবাদ প্রকাশ করার পর এখন সবাই খবর নিচ্ছে। আল্লাহ আপনাদের ভালো করুক। তিনি সবার কাছে বাবলীর জন্য দোয়া চেয়েছেন।

রিপন দে/এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।