টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী মোস্তাককে অপহরণের অভিযোগ


প্রকাশিত: ১০:০৮ পিএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারী মোস্তাক আহমদ (৩২) অপহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সাদা পোশাকের কিছু লোক দু’টি গাড়ি নিয়ে এসে তাকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

এ ঘটনার জের ধরে টেকনাফ স্টেশন এলাকায় অসংখ্য দোকানপাট ও যানবাহনে ভাঙচুর চালিয়েছে জাফর চেয়ারম্যানের লোকজন। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে করা হয়েছে সড়ক অবরোধ। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদের বুধবার বিক্ষোভ সভার ডাক দিয়েছে জাফর চেয়ারম্যান অনুসারীরা। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১টা) কে বা কারা জাফরকে তুলে নিয়ে গেছে তা শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন কিংবা তার পরিবার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৯টার দিকে পুরান পল্লানপাড়া এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের বাসার আশপাশে দুটি মাইক্রোবাস এসে অবস্থান নেয়। এ সময় মোস্তাক মোটরসাইকেল চালিয়ে বাসার সামনে এলে মাইক্রোতে থাকা লোকজন তার গতিরোধ করে। তাকে মোটরসইকেল থেকে নামিয়ে দ্রুত মাইক্রোতে তুলে মুহূর্তে স্থান ত্যাগ করে।

এ ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। খবরটি দ্রুত তার বাসায় পৌঁছালে মোস্তাকের ভাই ও অন্যরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা স্টেশন এলাকার অসংখ্য দোকানপাটে হামলা চালায়। ভাঙচুর চালানো হয় রাস্তায় চলাচল করা সিএনজি ও অটোরিকশা এবং নানা ধরনের যানবাহনে। এসময় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হলে আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে পালাতে থাকেন।

এতে রাস্তার চতুর্পাশে যান চলাচল বন্ধ হলে মূহূর্তে নিস্তবদ্ধতা চলে আসে। মাইকিং করে বুধবার দোকানপাট না খুলতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেয়া হয় মোস্তাকদের পক্ষ থেকে। ভাঙচুরের খবর পেয়ে টেকনাফ থানার পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মোস্তাকের ছোট ভাই শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, তার ভাইকে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক সবার অলক্ষ্যে অপহরণ স্টাইলে তুলে নিয়ে গেছে। তাদের ধারণা এরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোক। তারা ছাড়া কেউ তার ভাইকে তুলে নেয়ার সাহস পাবে না বলে বিশ্বাস তার। এ ঘটনায় বুধবার স্টেশন এলাকায় প্রতিবাদ সভার ডাক দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ভাঙচুর ও অবরোধের বিষয়ে দৃষ্টিপাত করা হলে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার সাধারণ লোকজন তাদের পরিবারকে ভালোবাসে। এ পরিববারের একজনকে এভাবে নিয়ে গেলে লোকজন তো একটু উত্তেজিত হবেই।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান খন্দকার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টেকনাফ স্টেশন এলাকায় ভাঙচুর হচ্ছে শুনে পুলিশ ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এখানে এসে শুনতে পান মোস্তাককে কে বা কারা মাইক্রোতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে।

মোস্তাক আহমদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারী বলে উল্লেখ করেন ওসি। তবে কে বা কারা তাকে নিয়ে গেছে তা তাৎক্ষণিক বলতে না পারলেও, জানতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টেকনাফ ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, স্টেশন এলাকায় ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধের খবর শুনে বিজিবির একটি টিম ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সায়ীদ আলমগীর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।