নিহত মাদ্রাসা ছাত্রীকে নিয়ে লোমহর্ষক জবানবন্দি দিল দেবর-ভাবী


প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার পীর ফতেহাবাদ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ইয়াসমিন আক্তারের (১৪) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ এর নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ গোলামুর রহমানের আদেশক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দাউদ হোসেন চৌধুরীর উপস্থিতিতে ইয়াসমিনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোরশেদ, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম মজুমদারসহ সাংবাদিক ও এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দাউদ হোসেন চৌধুরী জানান, আদালতের নির্দেশে ভিকটিম ইয়াসমিন আক্তারের পেটে থাকা সাত মাসের বাচ্চার পূর্ণ ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তলন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে বড় ভাইয়ের স্ত্রী এবং চাচাতো ভাই ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ হত্যা করে। পরদিন বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই আল আমিন (২৫) বাদী হয়ে চাচাতো ভাই আলী হামজাকে (২৬) প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করে।

এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের গোয়াইনঘাটের পাহাড়িয়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ভিকটিমের চাচাতো ভাই ও কথিত  প্রেমিক মো. আলী হামজাকে (২৬)।

পরে গ্রেফতারকৃত আলী হামজার স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার রাতে উপজেলার পশ্চিম ফতেহাবাদ গ্রামের ভিকটিমের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয়। তিনি ভিকটিমের আপন ভাই লেবানন প্রবাসী মোকবুলের স্ত্রী জামিনা বেগমকে। গ্রেফতারের পর আলী হামজা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভাবি জামিনা বেগম এবং প্রেমিকা ইয়াসমিনের সঙ্গে তার অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেন।

অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কারণে ইয়াসমিন গর্ভবতী হয়ে পড়ায় ভাবির সহায়তায় ভিকটিমকে ভাবির ঘরে ডেকে এনে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর বাড়ির পাশের একটি জমিতে মরদেহ ফেলে দেয় হয়।

গত শনিবার ভিকটিমের কথিত প্রেমিক ও ভাবি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। এ সময় তাদের স্বীকারোক্তিতে নিহত ইয়াসমিন অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেলে আদালত ভিকটিম ইয়াসমিন আক্তারের পেটে থাকা সাত মাসের বাচ্চার পূর্ণ ময়নাতদন্ত ও  ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার আদেশ দেয়।  

মো. কামাল উদ্দিন/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।