রানাকে বাঁচাতে ছাত্রলীগের যুদ্ধ

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশিত: ০৫:১২ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. তাওহিদুজ্জামান রানার চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে রানার চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-সম্পাদক মনজুর মোর্শেদ অসিম ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাব্বির হোসেন শুভ।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল শাহজালাল (র.) মেডিকেল ইনস্টিটিউশন থেকে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পাস করা তাওহিদুজ্জামান রানা উপজেলার মহেড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি উপজেলার মহেড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। রানার বড় দুই বোন রয়েছে। এক বোনের বিয়ে দিয়েছেন। সংসারে রানার বড় এক বোন ও মা-বাবা রয়েছেন।

বাবা আবুল হোসেন পেশায় পশুচিকিৎসক। গ্রামে গ্রামে গিয়ে পশুচিকিৎসা করে যা আয় করেন তা দিয়েই সংসার চালাতে হয়। এর মধ্যে ছেলের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ায় আয়-রোজগার বন্ধ করে ছেলের সঙ্গে ভারতের হায়দরাবাদে রয়েছেন। একদিকে সংসার চালানো অন্যদিকে ছেলের চিকিৎসা সব মিলিয়ে রানার পরিবার এখন হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। তাওহিদুজ্জামান রানা বর্তমানে গলায় ও ঘাড়ে ক্যান্সারে (ননহসকিন লিস্ফোমা) আক্রান্ত হয়ে ভারতের হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, তাওহিদুজ্জামান রানা তিন মাস আগে গলায় ব্যথা অনুভব করেন। প্রথমে তিনি টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পরীক্ষা করান। সেখানে তারা সঠিক রোগ নির্ণয় করতে ব্যর্থ হলে ঢাকায় পরীক্ষা করালে গলায় ও ঘাড়ে ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। সেখানে তার বোনম্যারো পরীক্ষা করা হয়। তাকে এখন পর্যায়ক্রমে ৮টি ক্যামো থেরাপি দিতে হবে। প্রতিটি ক্যামোতে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হবে। সে হিসাবে তার ৮টি ক্যামো-থেরাপির জন্য ১৬ লাখ টাকার প্রয়োজন। এছাড়া থাকা খাওয়া ও ওষুধ বাবদ আরও টাকা প্রয়োজন বলে রানার বড় বোন আশরাফুন্নাহার জানিয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রানার খবর শুনে মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মীর আসিফ অনিক, সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান মাজেদুর রহমান বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান। পাশাপাশি বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানানো হয়।

পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী রানার অসুস্থতার সব কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠান মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মীর আসিফ অনিক ও সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম। আবেদনের প্রেক্ষিতে রানার চিকিৎসার জন্য দুই লাখ টাকার অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে, রানার চিকিৎসার জন্য ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীরুল ইসলাম হিমেল। পাশাপাশি মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ ‘হেল্প ফর রানা’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছেন।

এছাড়া মির্জাপুরের এমপি একাব্বর হোসেন ৫০ হাজার, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হংকং শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন ব্যক্তিগতভাবে ২৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্নজনের কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছেন। এসব টাকা দু’একদিনের মধ্যে রানার মায়ের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে অর্থ সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

এছাড়া সিঙ্গাপুর প্রবাসী শহিদুল ইসলাম ২০ হাজার, আমেরিকা প্রবাসী তোফাজ্জল হোসেন ১০ হাজার এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ৪ লাখ টাকা রানার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন বলে রানার মা রেখা বেগম জানিয়েছেন।

রেখা বেগম বলেন, আমার ছেলের প্রাণ বাঁচাতে দলীয় নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষ যুদ্ধ করে চলছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। রানাকে আমি সুস্থ দেখতে চাই।

এস এম এরশাদ/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।