রাঙামাটি ফিসারি সড়ক সংযোগ বাঁধ হুমকির মুখে
রাঙামাটি শহরের ফিশারি সড়ক সংযোগ বাঁধটি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। চলতি বর্ষায় ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। সংস্কার না হওয়ায় বাঁধটির অস্তিত্ব ক্রমে বিপর্যয়ের দিকে চলে যাচ্ছে।
রাঙামাটি শহর রক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সংযোগ দিতে বাঁধটি নির্মিত হয় ১৯৬৪ সালে। কিন্তু বাঁধটি নির্মাণের পর এ পর্যন্ত একবারও সংস্কার করা হয়নি। ফলে কাপ্তাই লেকের ভাঙন ও মাটি ধসে যাওয়সহ নানাভাবে মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে এ বাঁধটি।
এ অবস্থায় দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে কাপ্তাই হ্রদ বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘের ওই সড়ক সংযোগ বাঁধের উভয় পাশে জ্বালানি কাঠ মজুদ রাখা ও মালামাল ওঠানামাসহ পরিবহন শ্রমিকদের গাড়ি ধোয়া-মোছার কারণে ভাঙন ক্রমশ বাড়ছে।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জনসাধারণের জন্য জারি করা সতর্কতার নোটিসে জেলা প্রশাসন থেকে বলে দেয়া হয়, রাঙামাটি জেলা শহরের ফিশারিঘাট থেকে ট্রাক টার্মিনাল পর্যন্ত নির্মিত ওই বাঁধটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাঁধটি রাঙামাটি শহরের দুটি অংশকে সংযুক্ত করে রেখেছে। কাপ্তাই লেকের পানি বাড়লে লক্ষ্য করা যায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত কান্ট্রিবোট, ট্রলার, নৌকায় মালামাল ওঠানামা করা হয়ে থাকে। এতে বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে গেলে রাঙামাটি শহরের দুই অংশে বিভক্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তাই জনস্বার্থে রাঙামাটি শহরের ফিশারিঘাট থেকে ট্রাক টার্মিনাল পর্যন্ত বাঁধে লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত কান্ট্রিবোট, ট্রলার, নৌকায় মালামাল ওঠানামা না করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে শহরের একমাত্র সংযোগ বাঁধটি রক্ষায় স্থায়ী কোনো পরিকল্পনা না নেয়ায় যেকোনো মুহূর্তে মাটি ধসে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাঁধের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ দরকার। এছাড়া বাঁধের মাঝপথ দিয়ে যাতে নৌ-চলাচল করতে পারে এবং শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য মাঝখানে মজবুত ও স্থায়ী ঝুলন্ত সেতু করা হলে সর্বাধিক কাজে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় মহলগুলো।
উল্লেখ্য, বাঁধটি একদিকে যেমন শহর রক্ষা ও সড়ক সংযোগ স্থাপন করেছে অন্যদিকে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়েছে বহুগুণ। এর আগে রাঙামাটি জেলা পরিষদ থেকে একাধিকবার লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে ঘেরাবেড়ার কাজ করলেও তাতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। রাস্তার দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হলেও মজবুত ঘেরাবেড়া না থাকায় সেগুলো গরু, ছাগলে খেয়ে উজাড় করে ফেলে। বর্তমানে ভাঙন বেড়ে বাঁধটির মাটি সরে যাচ্ছে। ফলে বাঁধের মাটি নরম হয়ে হ্রদের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/পিআর