মুক্তিযোদ্ধার মেয়ের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিলো সন্ত্রাসীরা
পূর্ব বিরোধের জের ধরে পাবনার সাঁথিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে কলেজছাত্রী মুক্তির (২২) শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
আহত মুক্তি খাতুনকে প্রথমে সাঁথিয়া ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের ৬২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে ঘটনাটি উপজেলার নাগডেড়া ইউনিয়নের নাগডেমরা গ্রামে ঘটেছে।
এ ঘটনায় সাঁথিয়া থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে দু’পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, উপজেলার নাগডেমরা গ্রামের উন্মুক্ত জলাশয় দখলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক ও সালাম গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯ আগস্ট রোববার দুপুরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন সালামের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেলের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য পুরুষ সদস্যরা বড়াল নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। পুরুষদের না পেয়ে হামলাকারীরা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেলের মেয়ে মুক্তি খাতুনকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তার চাচাতো বোন আফরোজা খাতুন (৩০) এগিয়ে আসলে তারা তাকেও পিটিয়ে আহত করে ফেলে রাখে। তারা ফিরে আসার সময় মুক্তিযোদ্ধার একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আহত মুক্তি ও আফরোজাকে স্থানীয়রা সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় মুক্তির বাবা মুক্তিযোদ্ধা মোজ্জাম্মেল হক বাদী হয়ে ৩২ জনকে আসামি করে রোববার রাতে সাঁথিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। রাতেই পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম পিপিএম, বেড়া সার্কেল এর এএসপি আশিস বিন হাসান ও র্যাবের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
একে জামান/এমএএস/এমএস