কাঠের গুড়ির রমরমা ব্যবসা
কোরবানির ঈদের বাকি আছে আর মাত্র একদিন। এরইমধ্যে অনেকেই পশু কিনে ফেলেছেন। এখন প্রয়োজন মাংস কাটার জন্য কাঠের গুড়ি, ছুরি-চাকু, চাটাইসহ অন্যান্য আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র। রাজশাহী নগরীতে এখন এসব পণ্যের কেনাবেচা জমজমাট। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব পণ্যের অস্থায়ী দোকান। কেউ কেউ অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি এসব পণ্যের পসরা মেলেছেন।
নগরীর শালবাগান মোড়ে কাঠের গুড়ি বিক্রি করছেন আকতারুজ্জামান উল্লাস। তিনি রাজশাহী কোর্ট বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ছাত্র।
উল্লাস জানান, গত চার বছর ধরে এ ব্যবসায় যুক্ত তিনি। কারণ এ সময় ঈদের ছুটি থাকে। তাছাড়া মৌসুমি এ ব্যবসায় আয়-রোজগারও বেশ।
কেবল এই শিক্ষার্থীই নন সেখানে এসব পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী লতা, মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী আমির হোসেন, বাস কর্মচারী সমিতির সদস্য মো. রানাও।
তারা জানান, চাহিদা বেশি থাকায় এ ক’দিন ভালোই ব্যবসা হয়। আয়-রোজগার ভালো হওয়ায় নতুন নতুন লোক এখানে যুক্ত হচ্ছেন।
শালবাগান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি বিক্রি করছে এসএম জ্বালানি উৎস। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও মৌসুমি এসব পণ্যের বিক্রেতা।
জ্বালানি উৎসের স্বত্ত্বাধিকারী নাসির হোসেন বাবু জানান, প্রতি কেজি ১০ টাকা করে খড়ি হিসেবেই তেঁতুল, লিচু, বাবলাসহ বিভিন্ন গাছের গুড়ি কিনে এনেছেন। তবে মাংস কাটার গুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি। আর সাইজ ভেদে দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২৫শ টাকা পর্যন্ত।
নাসির হোসেন বাবু আরো জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি মৌসুমি এই ব্যবসা করেন। এবার ১০ লাখ টাকার গাছ কিনেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত গুড়ি পয়েছেন ৪ লাখ টাকার। এর মধ্যে দেড় লাখ টাকার গুড়ি পাইকারি বিক্রি করেছেন। পুরো গুড়ি বিক্রি হলে লাভ হবে দ্বিগুন।
তবে পাইকারি বিক্রেতাদের তুলনায় খুচরা বিক্রেতাদের লাভের অঙ্ক কম। পাইকারি গুড়িতে সামান্য লাভ পেলেই বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। তারা বলছেন, দাম বেঁধে দিচ্ছেন পাইকারি বিক্রেতারাই। ফলে পুঁজি রক্ষায় তারা চড়া দামেই বিক্রি করছেন গুড়ি।
কেবল কাঠের গুড়ি-ই নয়, বিক্রি হচ্ছে খেজুর পাতার পাটি, রামদা, বটি, ছুরি ও চাকুও। প্রতিটি খেজুর পাতার পাটির দাম পড়ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া রামদা ও বড় ছুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, মাঝারি ছুরি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট ছুরি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও পাতলা ছোট ছুরি প্রতি পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদ ঘনিয়ে আসায় বেচাবিক্রিও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/জেআইএম