এমপির সামনেই অধ্যক্ষকে বেধড়ক পেটালেন আ.লীগ নেতা!
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এমপির উপস্থিতিতে অধ্যক্ষকে বেধড়ক পিটিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীরা। রোববার সন্ধ্যার পর গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ওই সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলছিল।
পরে আহত অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জানান, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতেই আওয়ামী লীগ নেতা অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস ও তার সহযোগীরা এ হামলা চালিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) এলাকার সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে রোববার বিকেলে কলেজ পরিচালনা
পর্ষদের সভা শুরু হয়। সভায় অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান তাকে কমিটির দেয়া কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করেন।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দেয়া শোকজ ও জবাব দাখিল নিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের সঙ্গে কমিটির সদস্য ও গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অয়েজুদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এই দুই জনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এএসপি সার্কেলসহ সংশ্লিষ্টরা উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভা চলার এক পর্যায়ে অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস কলেজ সরকারি হওয়ায় ৪০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য কলেজ অধ্যক্ষকে চাপ দেন। এই
টাকা ওপরের খরচ হিসাবে এমপির হাতে দিতে হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতা অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস অধ্যক্ষকে জানান।
এছাড়া অনার্স ক্লাসের শিক্ষক নিয়োগের প্রায় এক কোটি টাকার হিসাব অধ্যক্ষের কাছে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে সভার মধ্যে।
এদিকে, এ খবর ছড়ালে অয়েজুদ্দিন বিশ্বাসের একদল অনুসারী কলেজের সভাকক্ষে প্রবেশ করেন। তারা অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানকে বেধড়ক মারপিট শুরু করেন। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতার অনুসারীরা মাটিতে ফেলে দিয়ে চেয়ার দিয়ে অধ্যক্ষকে পেটান।
এতে অধ্যক্ষ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ হয়নি। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করাও যায়নি।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অয়েজুদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগে করে তাকে পাওয়া যায়নি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/জেএইচ