শিশু পানিতে নামলেই বেজে উঠবে এলার্ম

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক বেনাপোল (যশোর)
প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০১৮

নতুন কিছুর প্রতি অপার আগ্রহ তার। সেই আগ্রহই তাকে টেনে এনেছে আবিস্কারের জগতে। একে একে বানিয়েছেন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পানি তোলার যন্ত্র, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, মোটরকার, প্রতিবন্ধীদের বিশেষ যান এমন আরও কত কী! এবার পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুহার রোধে অভিনব যন্ত্র আবিস্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মিজানুর রহমান।

৪৭ বছর বয়সী মিজানের বাড়ি যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামে। পেশায় মোটরসাইকেল মেকানিক। শার্শা উপজেলা সদরেই তার ‘ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ার্স’ নামের ওয়ার্কশপ। মোটর মেরামতের এই দোকানেই চলে তার জীবিকা।

মিজানুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত আটটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেছি। গবেষণা পর্যায়ে আছে আরও চারটি যন্ত্র।

স্বশিক্ষিত এই উদ্ভাবকের বাবাও ছিলেন মোটর মেকানিক। বাবা যখন মোটর মেরামতের কাজ করতেন, সেটা তন্ময় হয়ে দেখতেন ছোট্ট মিজানুর। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় মিজানুর। সপ্তম শ্রেণির পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। বাবার পেশাতেই এক সময় জড়িয়ে পড়েন। মোটর মেরামতের কাজ করতে করতেই মাথায় চাপে উদ্ভাবনের নেশা।

১৯৯৪ সালের কথা। বানালেন নতুন এক ইঞ্জিন। নাম দিলেন আলগা ইঞ্জিন। এর যন্ত্রাংশ বাইরে থেকে দেখা যায় বলেই এমন নাম। তবে এখন সেই যন্ত্রটি আর নেই। সেই থেকেই শুরু তার উদ্ভাবক জীবনের যাত্রা। উদ্ভাবনের জন্য পেয়েছেন নানা পুরস্কারও।

পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

শিশু মৃত্যুর এমন খবরে মন কেঁদেছে উদ্ভাবক মিজানুর রহমানের। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে তিনি তৈরি করেছেন এমন এক যন্ত্র যা শিশুকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে। দীর্ঘদিন তিনি এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে করতে অবশেষে সফলতা পেয়েছেন।

মিজানুর বলেন, আমি এমন এক যন্ত্র আবিস্কার করেছি যা শিশুর শরীরে যেকোনো জায়গায় তাবিজের মতো বেঁধে রাখতে হবে। অতি ক্ষুদ্র এ যন্ত্রটি বহনে শিশুর কোনো সমস্যা হবে না। ডিভাইস ব্যবহৃত শিশু যখনি পানির সংস্পর্শে আসবে তখন তার বাড়িতে রাখা এলার্মে বিপদ সংকেত বাজতে থাকবে। ফলে বাড়িতে থাকা শিশুটির পরিবারের যে কেউ তাকে উদ্ধার করতে পারবে।

মিজানুর রহমান আরো জানান, তার যন্ত্রটির এখনো কাঙ্ক্ষিত আকার দেয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে এই যন্ত্রটির আকার একটু বড়। ধীরে ধীরে এই যন্ত্রটি শিশুর বহন উপযোগী করে তোলা হবে।

যন্ত্রটি তৈরি করতে মিজানুরের লেগেছে একটি মোবাইল ব্যাটারি, একটি ডিভাইস ও একটি এলারম মাইক। প্রাথমিকভাবে পর্যায়ে এ যন্ত্রটি কিনতে ৩শ থেকে ৫শ টাকা লাগবে।

এ ব্যাপারে মিজানুর বলেন, কোনো কিছু করতে হলে প্রয়োজন হয় অর্থের। অর্থ ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। তাই সরকারের সুদৃষ্টি কামনাসহ অর্থের জোগান দিতে পারলেই এ যন্ত্রটি বাজারজাত করতে পারবো। আর তা থেকেই দেশ ও দেশের বাইরের অনেক শিশুকে অকাল মৃত্যু থেকে বাঁচানো যাবে।

জামাল হোসেন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।