মেহেরপুরে দেশি গরুর কদর বেশি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০১৮

মেহেরপুরে দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে পশুর হাটগুলোতে। এর মধ্যে অল্প কিছু ভারতীয় গরুও উঠেছে। তবে এবার দেশি গরুরই কদরই বেশি। হাটে প্রচুর পরিমাণ গরুর আমাদানি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে। হাটকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

জেলার গাংনী উপজেলার নিশিপুর বামুন্দি পশুর হাটে জেলার প্রধান হাট। এবার এই হাটের ইজারা হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। আশেপাশের বেশ কয়েকটি জেলাসহ ঢাকার ব্যবসায়ীরা আসেন এই হাটে। সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার এই হাট বসে।

গত বৃহস্পতিবার হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের বেশির ভাগ গরুই দেশি। ইজারাদার আরিফ হোসেনের হিসেব মতে, হাটের ৬৫ শতাংশ গরুই দেশি। বাকি ৩৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় গরু ও মহিষ।

jagonews

জেলার মুজিবনগর উপজেলা আজিজুল শেখ ৫৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি দেশি গরু কিনেছেন। তার আন্দাজ সাড়ে তিন মণ মাংস হবে। তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে কোরবানির গরুর, ছাগলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। এর আগে সাড়ে তিন মণ ওজনের গুরুর দাম ছিল ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

গাংনী উপজেলার তেতুলবাড়িযা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী জামিদুল ইসলাম বলেন, হাটে ছোট-বড় ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে দুটি গরু বিক্রি করেছেন ৪৭ ও ৫৫ হাজার টাকায়। গরু হাটের মতো পাশের ছাগলের হাটেও ক্রেতাদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। একটি মাঝারি আকারের ছাগল ১৫-২৯ হাজার টাকা দাম উঠলেও সবচেয়ে দামি ছাগলের দাম উঠেছে ৫৫ হাজার টাকা। ছাগলটি সদর উপজেলা রাধাক্রান্তপুর থেকে নিয়ে এসেছেন সাফায়েত আলী।

জেলাতে বামুন্দি নিশিপুর পশুর হাটসহ আরও ছোট-বড় দুইটি পশুর হাট রয়েছে। সদরের পৌর পশুর হাট, সদরের বারাদি ছাগলের হাট। জেলা প্রশাসন জেলার প্রতিটি পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের ওপরে নজরদারি করছে। চলতি কোরবানির পশুর হাটে গরু প্রতি ক্রেতাদের ক্রয় করতে ৫০০ টাকা বিক্রিতে ১০০ টাকা হাসিল আদায় করতে দেখা গেছে।

jagonews

ভারতীয় গরু কম আসার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ভারতেই এক জোড়া বড় গরুর দাম পড়ে ৪০ হাজার টাকা। বাংলাদেশে আনার পর সরকারি কাগজ করা থেকে শুরু করে পুলিশ, বিজিবি, ঘাঁটিয়াল ইত্যাদি মিলে গরু প্রতি আরও প্রায় চার হাজার টাকা খরচ পড়ে। তাই খরচ বেশি পড়ায় ভারতীয় গরুর আমদানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কমছে।

দেশি গরুর কদর ও দাম বেশি হওয়ায় উপজেলার ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, একটা গরুর কী পরিমাণ মাংস হতে পারে এই আন্দাজ করে তারা গরু কেনাবেচা করে থাকেন। গত বছর তারা ১৫-১৬ হাজার টাকা মণ ধরে গরু কিনেছেন। ভারতীয় গরুর চেয়ে দেশি গরুর মাংসের স্বাদ ভালো হওয়ার এই গরুতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। তাছাড়া ভারতের গরুতে অনেক সময় অ্যানথ্রাক্স রোগ থাকে।

jagonews

মেহেরপুর পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানিকে কেন্দ্র করে পশুরহাটগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেতা বিক্রেতা কোনো প্রকার হয়রানির শিকার যেন না হয় এ বিষয়ে পুলিশ নজরদারি করছে।

জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলার উল্লেখযোগ্য তিনটি পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার কথা বিবেচনা রেখে সব রকমের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পশুর বর্জ্য নিষ্কাশনের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আসিফ ইকবাল/আরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।